প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে যশোরে মানববন্ধন করেছেন চার জেলার শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে যশোর জেলার আটটি উপজেলা ছাড়াও ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় তাদের হাতে ছিল ‘দাবি মোদের একটাই—প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও চাই’, ‘অবহেলা নয়, ন্যায্য অধিকার চাই’সহ নানা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড।
বক্তারা বলেন, শিক্ষানীতির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতেই হবে। অথচ এসব বিদ্যালয় আজও সরকারিভাবে স্বীকৃত ও এমপিওভুক্ত হয়নি। তারা অভিযোগ করেন, বহুবার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ বলেন, “শুধু যশোর জেলাতেই রয়েছে ৭৪টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, যেখানে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী এবং ১২ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, থেরাপি ও জীবনদক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম চালালেও স্বীকৃতি না থাকায় বিভিন্ন সংকটে পড়তে হচ্ছে।”
মানববন্ধনে হুইলচেয়ারে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন শার্শার নাভারণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবু বক্কর। তিনি বলেন, “আমার দুটি পা নেই, আমি জানি একজন প্রতিবন্ধীর কষ্ট কী। ২০১৭ সালে নিজের জমিতে বিদ্যালয় গড়েছি, ২০১৮ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সনদ পেয়েছি—তবু এখনো কোনো এমপিওভুক্তি হয়নি।”
একজন অভিভাবক শহিদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “প্রতিবন্ধী সন্তানের বাবার কষ্ট কেউ বোঝে না। কিন্তু আমাদের সন্তানরাও সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। সরকার যেন তাদের সম্মানের সঙ্গে বাঁচার সুযোগ দেয়।”
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের যশোর জেলা সভাপতি রাজু আহমেদ, সহসভাপতি আব্দুল সালাম, সহসম্পাদক মুক্তারুজ্জামান ও প্রচার সম্পাদক মমতাজ খাতুন।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব এলাকা থেকে বের হয়ে দড়াটানা মোড় ঘুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংগঠনের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।