আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে যশোরের চৌগাছা পৌরসভার পশু হাটে খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য চৌগাছা পৌরসভা হাট ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। তবে চৌগাছা পশু হাটটি ইজারার বাইরে রাখা হয়। এ অবস্থায় ঝিনাইদহের আবিদুর রহমান লালু হাটটি ইজারা নেওয়ার দাবিতে হাইকোর্টে রিট (নং ২২৫৫) করেন। আদালত চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাট ইজারার কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন।
তবে ওই আদেশের তোয়াক্কা না করে পৌর কর্তৃপক্ষ আবিদুর রহমান লালুকে হাটটি ইজারা দেয়। অথচ ইজারায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, যেমন মেসার্স শয়ন ট্রেডার্স, মশিয়ার রহমান ও আলিফ এন্টারপ্রাইজ— গত বছরের তুলনায় যথাক্রমে ৩৮, ৩০ ও ৩৫ শতাংশ বেশি দর প্রদান করেছিল।
সর্বোচ্চ দরদাতা মেসার্স শয়ন ট্রেডার্স-এর মালিক আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, “আমি ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা দর দিয়েও হাটের ইজারা পাইনি। বরং কম দরদাতা আবিদুর রহমান লালুকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত ইজারার ওপর স্থগিতাদেশ দেন।”
এ বিষয়ে চৌগাছা পৌরসভার প্রশাসক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. তাসমিন জাহান বলেন, “আদালতের সিদ্ধান্তের আগেই হাট ইজারার সিদ্ধান্ত হয়। পরে আদালতের আদেশ আসায় আমরা উভয় পক্ষকে আলোচনার জন্য ডেকেছি, তবে আবিদুর রহমান হাজির হননি।”
সূত্রমতে, বিগত কয়েক বছর ধরেই হাট ইজারা নিয়ে অনিয়ম চলে আসছে। ১৪৩১ সনে ইজারাদার মিজানুর রহমান প্রায় ১০ লাখ টাকা বকেয়া রেখেছেন। ১৪৩০ সালে ইজারাদার আসিফ ইকবালের বকেয়া ৩৩ লাখ টাকা, ১৪২৯ সালে শামীম রেজার বকেয়া ৫৫ লাখ টাকা এবং ১৪২৮ সালে ইয়ামূল অর রশিদের বকেয়া প্রায় ২৬ লাখ টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিক বছর ধরে এক শ্রেণির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক মহলের ছত্রছায়ায় পশু হাটটি অবৈধভাবে দখলে রেখে কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে। ভয়ের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।