Sunday, April 27, 2025

নাফ নদীতে আরাকান আর্মির দাপট: জেলেদের দুঃসময়

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দাপটে জেলেদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত পাঁচ মাসে এ গোষ্ঠী দেড় শতাধিক বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করেছে। এর ফলে টেকনাফের অন্তত ৪০০ ট্রলারের মাছ ধরা বন্ধ হয়ে গেছে।

সবশেষ ৮ এপ্রিল বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমা থেকে ২৩ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। এরপর থেকেই তিন হাজারের বেশি জেলে নাফ নদী ও সাগরে নামতে ভয় পাচ্ছেন।

এদিকে, গতকাল ১৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে মাছ ধরায় সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। তবে তার আগেই জেলেরা নিজেদের নিরাপত্তার কারণে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন।

বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান জানান, রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির দখলদারির পর অপহরণ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত অপহৃত ১৫১ জনের মধ্যে ১৩৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, আরাকান আর্মি দ্রুতগতির স্পিডবোট নিয়ে নাফ নদীর বাংলাদেশ জলসীমায় ঢুকে পড়ে এবং অস্ত্রের মুখে জেলেদের অপহরণ করছে। জেলে পরিবারগুলো দিন কাটাচ্ছেন অনিশ্চয়তা আর দুঃচিন্তায়।

সম্প্রতি বন্দিদশা থেকে মুক্ত কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যেই আরাকান আর্মি এমন কৌশল নিচ্ছে।

টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানান, পরিস্থিতি সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের সতর্ক করা হয়েছে যাতে তাঁরা মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে না পড়েন।

সাবরাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান জানান, প্রায় আড়াই মাস ধরে মাছ আহরণ না করায় জেলেদের জীবনে চরম সংকট নেমে এসেছে। এর প্রভাব বাজারেও পড়েছে—সামুদ্রিক মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

অপহৃত জেলেদের পরিবার এবং স্থানীয় জেলে সমাজের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর