যশোর সদর উপজেলার দাইতলা গ্রামে সন্তান কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার সময় কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন মিতা খাতুন (৩০) নামে এক সেবিকা। মিতা আওয়ামী লীগ নেতা ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।
নিহত মিতা খাতুন দাইতলা গ্রামের দরিদ্র মনিরুল ইসলামের মেয়ে। তার মা রেক্সোনা খাতুন যশোর শহরের আশশেফা হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত।
রেক্সোনা খাতুন জানান, পাঁচ বছর আগে মিতা গোপনে বিয়ে করেন জাহাঙ্গীর আলমকে। তার আগে জাহাঙ্গীরের প্রথম স্ত্রী ছিলেন নিঃসন্তান নীলা খাতুন। সন্তানের আশায় দ্বিতীয় বিয়ে করলেও মিতা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকেই স্বামীর অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হন।
বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় একটি পুত্রসন্তান—জায়ান আলম (৪ বছর ৬ মাস)। তবে প্রথম স্ত্রী নীলা মিতাকে মেনে না নেওয়ায় তিনি বাবার বাড়িতে সন্তানসহ বসবাস করছিলেন।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, প্রথম স্ত্রীর চাপে জাহাঙ্গীর মিতাকে তালাক পাঠান। তবে মিতা তা গ্রহণ করেননি। এরপর জাহাঙ্গীর ও তার লোকজন সন্তান কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
গত শনিবার বিকেলে জাহাঙ্গীর আলম কয়েকজন লোক নিয়ে মিতার পিত্রালয়ে হাজির হয়ে সন্তানের জোরপূর্বক হেফাজত নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় মানসিক চাপে পড়ে মিতা কীটনাশক পান করেন।
স্থানীয়রা তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর ও তার স্বজনরা ময়নাতদন্ত না করার জন্য পুলিশ ও পরিবারের ওপর চাপ দেন। তবে পুলিশ জানায়, আত্মহত্যার ঘটনায় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তর সম্ভব নয়।
ঘটনার পর কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। নিহতের মা রেক্সোনা খাতুন মেয়ের মৃত্যুর বিচার দাবি করেছেন।