কর্মব্যস্ত জীবনে সময় ও শ্রম বাঁচাতে একই স্থানে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটার সুবিধা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উৎসবের কেনাকাটায় এমন স্থান ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। যদি এমন স্থানে সাশ্রয়ী দামে মানসম্মত জামা, জুতা, ব্যাগ ও কসমেটিকস্ পাওয়া যায়, তবে তা বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। এ কারণেই যশোর শহরের প্রচলিত বিপণীবিতানের পাশাপাশি পুলিশ প্লাজা মার্কেট ক্রেতাদের বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। শহরের সর্বত্র কেনাকাটার ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিজের ও পরিবারের জন্য কেনাকাটায় ক্রেতারা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটছেন। পুলিশ প্লাজার বিক্রেতারাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মার্কেটের দোকানগুলোতে বাহারি ডিজাইনের ঈদ পোশাক শোভা পাচ্ছে। দোকানগুলোর শেলফ্ সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয়ভাবে। পাঁচ বছর আগে চালু হওয়া এই মার্কেট মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে সব শ্রেণির ক্রেতারাই এখানে কেনাকাটা করেন। পোশাকের পাশাপাশি এখানে জুতা-স্যান্ডেল, ব্যাগ, কসমেটিকস্, ক্রোকারিজ, ড্রাই ফুড, গৃহসজ্জা সামগ্রী, সানগ্লাস, ঘড়ি ও ইমিটিশনের অলংকার পাওয়া যায়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই মার্কেট।
বিভিন্ন পণ্যের দরদাম
পুলিশ প্লাজায় কিশোরী ও তরুণীদের জন্য ওয়ান পিস ও টপস্ ৪০০ থেকে ১,৯০০ টাকা, স্কার্ট ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, লেডিস প্যান্ট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, থ্রি পিস ৪০০ থেকে ২,২০০ টাকা, জুতা ১৫০ থেকে ১,৫০০ টাকা, মেহেদি ৩০ থেকে ৬০ টাকা, কানের দুল ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, চুড়ি সেট ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, পায়েল ৬০ থেকে ১০০ টাকা, নেকলেস সেট ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, ব্রেসলেট ৫০ থেকে ২০০ টাকা, আংটি ১০০ থেকে ৩৫০ টাকা, নেলপলিশ ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লিপস্টিক ১০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মেকআপ ফাউন্ডেশন ১৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, মেকআপ বক্স ২০০ থেকে ৫৫০ টাকা, হ্যান্ড ব্যাগ ৩৫০ থেকে ১,৮৫০ টাকা, সানগ্লাস ১০০ থেকে ২,০০০ টাকা, ঘড়ি ১০০ থেকে ২,৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি ৬০০ থেকে ২,২০০ টাকা, শার্ট ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, গেঞ্জি ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, জিন্স প্যান্ট ৪০০ থেকে ১,০০০ টাকা, গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। শিশুদের জন্য পাঞ্জাবি ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা, গেঞ্জি ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শার্ট ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, প্যান্ট ৪০০ থেকে ১,০০০ টাকা, মেয়ে শিশুদের পোশাক ৩৫০ থেকে ১,০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
মুরলী এলাকার জাকিয়া সুলতানা বলেন, “গত ঈদের মতো এবারের ঈদেও পুলিশ প্লাজায় কেনাকাটা করতে এসেছি। এখানে বেশি ঘোরাঘুরির প্রয়োজন হয় না, এক জায়গায় সাশ্রয়ী দামে অনেক কিছু পাওয়া যায়।”
মোল্লাপাড়ার জিনাত রেহানা বলেন, “এখানে পোশাক ছাড়াও ঘরোয়া ব্যবহার্য পণ্য পাওয়া যায়। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই এখানে আসি।”
বারীনগরের সোহান হোসেন বলেন, “আমার কেনাকাটা প্রায় শেষ, আজ এসেছি ঘড়ি কিনতে।”
বাঘারপাড়া থেকে আসা মনিরা খাতুন বলেন, “সুতির থ্রি পিস কিনতে এসেছি। এখানে অল্প দামে ভালো মানের থ্রি পিস পাওয়া যায়।”
রাফিয়া থ্রি পিসের বিক্রয়কর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, “১৫ রোজার পর থেকে বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমাদের সব পোশাক আনস্টিচড, দর্জিরা এখন অর্ডার নিচ্ছেন না, তাই কিছু ক্রেতা কমেছে।”
আল আমিন সিটি গোল্ডের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, “কসমেটিকস্ ও ইমিটেশনের বিক্রি শেষের দিকে বাড়ে। ২০ রোজার পর থেকে ক্রেতারা আসছেন, বিক্রি ভালো হচ্ছে।”
নিশাত ফ্যাশনের আলী হোসেন বলেন, “ওয়ান পিস ও টপস্ সবসময় বেশি বিক্রি হয়। কিশোরী ও তরুণীরা এগুলোই বেশি পছন্দ করছেন।”
তথ্যসূত্র: গ্রামের কাগজ