মাগুরার নির্যাতিত সেই শিশুর শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। শিশুটির মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়েছে বলে আজ মঙ্গলবার সকালে মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য নিশ্চিত করেছেন।
চিকিৎসকেরা জানান, গতকাল সোমবার শিশুটির সামান্য উন্নতি হয়েছিল। তবে আজ তার অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। শিশুটির মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) অনুযায়ী শিশুটির চেতনার মাত্রা আবারও ৩-এ নেমে এসেছে, যা মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা নির্দেশ করে।
গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
শিশুটির মা ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, শিশুটির বোনের স্বামীর সহায়তায় তার শ্বশুর শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পর শিশুটিকে ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এতে তার মস্তিষ্কে দীর্ঘ সময় অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটে, যা এখন তার জীবন সংকটাপন্ন করে তুলেছে।
শিশুটির মা কেঁদে কেঁদে বলেছেন, “ইশ্! ক্যান যে পাঠাইছিলাম!”— তিনি বুঝতে পারছেন না, কেমন করে তার আপনজনরাই তার সন্তানের সঙ্গে এত নির্মম আচরণ করল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
শিশুটির পরিবারের সদস্যরা এবং দেশের সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুরো দেশবাসী এখন অপেক্ষায় রয়েছে, শিশুটি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে কি না, আর অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে কি না।