যশোর সদর উপজেলার বড় হৈবতপুরে মারপিট, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন বড় হৈবতপুর গ্রামের লাল্টু মিয়া। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে, এ সহিষ্ণতাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছয়জনকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে একজনকে এ মামলায় দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে। অপর পাঁচজনকে সন্দেহজনক ভাবে আটক দেখিয়ে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, বড় হৈবতপুরের বদির উদ্দিন বদা, সাইফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, আবুল হোসেন, তরিকুল, জহিরুল, ইউসুফ, শাহীন, মানিক, মতিরুল, ঝন্টু, কামরুল, রুবেল, হামিদ, নুর মোহাম্মদ, শাহাবুদ্দিন। তাদের মধ্যে মতিরুলকে এ মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
৫৪ ধারায় যাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে তারা হলেন, বড় হৈবতপুরের মহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, শরিফুল ইসলাম, নান্নু বিশ্বাস ও প্রান্ত।
মামলায় লাল্টু মিয়া উল্লেখ করেন, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তাদের সাথে দ্বন্দ্ব চলছিলো লাল্টু মিয়ার। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ধান ক্ষেতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে আসামিদের সাথে পাশের গ্রামের তৌহিদের হাতাহাতি মারামারি হয়। ঘটনাস্থলের মাঠের পাশেই তার বসত বাড়ি। ওই মারামারির জের ধরে ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টায় আসামিরা ধারালো অস্ত্রনিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরের শোকেসে থাকা ছয়ভরি সোনার গহনা লুট করে। যার দাম সাত লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া নগদ টাকা চার লাখ টাকা নিয়ে নেয় আসামিরা। এরপর লাল্টুর ভাই মিন্টুর ঘরে ঢুকে নগদ সাড়ে তিনলাখ টাকা ও মিন্টুর স্ত্রী শান্তা খাতুনের তিনলাখ ১৫ হাজার টাকার গহনা লুট করে। এছাড়া তার ঘরে থাকা আট বস্তা চাল নিয়ে যায়। পরে ঘরে থাকা টিভি ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এরপর তার ঘরে আগুন জালিয়ে দেয়। এছাড়াও তার বাড়ির গোয়াল, ঘর ও বিচেলি গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় আসামিরা। এছাড়া আসামিরা যাওয়ার সময় তার পটল ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত করে। আসামিরা সর্বমোট ১৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, আগুনের খবর শুনেই পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। এসময় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছয়জনকে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিকে এ মামলায় চালান করা হয়। তিনি আরও বলেন এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, মাঠে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মাইকে ঘোষনা দিয়ে আব্দুলপুরের আনিচ মেম্বারের নেতৃত্বে বড় হৈবতপুরের বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। এ অভিযোগে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন যুবদল নেতা রাজু। তার পরের দিন ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে বেশকয়েকটি বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন হৈবতপুরের বিক্ষুব্ধ জনতা। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন লাল্টু মিয়া।