যশোরের শার্শা থানার বেলতলা কুল বাজার দখল করে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে। ট্রাক চালকদের অভিযোগ, বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কিছু অসাধু শ্রমিক ও বেলতলা বাজার কমিটির সভাপতি মাহামুদ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, সাইফুল, হাকিম একত্রিত হয়ে স্লিপের মাধ্যমে ট্রাক প্রতি ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদা না দিলে ট্রাক লোড-আনলোডে বাধা ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর শার্শার বেলতলা বাজারে মৌসুমি বাজার হিসেবে আম ও কুলের পাইকারি বাজার বসে। দুই মৌসুমে বেলতলা বাজারে কোটি কোটি টাকার আম ও কুল পাইকারি বেচাকেনা হয়। আর এ আম ও কুল দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ও পিকআপে সরবরাহ হয়ে থাকে। এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু মটর শ্রমিক ও বেলতলা বাজার কমিটির সভাপতি মাহামুদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রতি ট্রাক থেকে ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। এতে চাঁদার রশিদও দেওয়া হচ্ছে। তাতে লেখা আছে ট্রাক বন্দোবস্তকারী অফিস। ট্রেড লাইসেন্স নং ৬৮৮, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত।
স্থানীয়রা আরও জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগ বেলতলা বাজার দখল করে রেখেছিলো। ঐ সময় তারা পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি করত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথমে বেলতলা বাজারে পকেট কমিটির মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহামুদ হোসেন ও কামরুজ্জামান। তারপর দখলে নেন বেলতলা বাজার। এরপর থেকে ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। মাহামুদ হোসেন কায়বা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও কামরুজ্জামান সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
বেলতলা বাজারে ট্রাক লোড করতে আসা আব্দুল কুদ্দুস নামে এক ট্রাক চালক বলেন, তার কাছ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাগআচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর শাহাদাত হোসেন বলেন, তিনি এখানে নতুন এসেছেন। বিষয়টি শুনেছেন, খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেলতলা বাজার কমিটির সভাপতি মাহামুদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বলেন, এখানে কোনো চাঁদাবাজি করা হয় না। কেউ জিম্মি করে কারও কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয় না। যেসব অভিযোগ উঠেছে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তারা দাবি করেন। তারা বলেন, এখানে একটি মটর শ্রমিক সংগঠন আছে। শ্রমিক সংগঠনটি কুল পরিবহনের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাক ভাড়া করে দেয়। তার ফলশ্রুতিতে তারা ২০০/১০০ টাকা শ্রমিক সংগঠনের ফান্ডে দিয়ে থাকেন।
বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক আনিসুর রহমান কিনা বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি কোনো খোঁজ রাখেননি। তারা কী করছে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে যশোরের শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।