আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শীর্ষ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে।
‘আফটার দ্য মনসুন রেভ্যুলিউশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
জাতীয় তদন্ত কমিশনের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি গুমের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা সংস্থাটিকে নিশ্চিত করেছেন যে, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা এসব গুম সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর গোপন আটক কেন্দ্র থেকে তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। গুমের শিকার আইনজীবী মীর আহমাদ বিন কাসেম তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, তাকে যে স্থানে আটক রাখা হয়েছিল তা বন্দিদের “মৃত্যুর চেয়েও খারাপ অভিজ্ঞতা” দেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
ন্যাশনাল ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্যাতনের ধরন শুধু পদ্ধতিগত নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিকও ছিল।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুমের জন্য দায়ী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভেঙে দিতে হবে। জাতীয় তদন্ত কমিশন ইতিমধ্যে এ সুপারিশ করেছে।
র্যাব প্রধান একেএম শহীদুর রহমান স্বীকার করেছেন যে, ইউনিটটির গোপন ডিটেনশন সেন্টার রয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলে র্যাব ভেঙে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের বিভেদ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর এর প্রভাব উল্লেখ করে, এইচআরডব্লিউ অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও স্বাধীন বেসামরিক তদারকি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বাহিনীর ক্ষমতা ব্যবহারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণের ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আইনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৫