Wednesday, February 19, 2025

মহাখালীতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যারিকেড

তিতুমীর কলেজের জন্য বিশেষ কিছু হচ্ছে না—শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজধানীর মহাখালীতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় কলেজটির শিক্ষার্থীরা মহাখালীর আমতলী থেকে গুলশান অভিমুখের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে সেখান থেকে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে যানচলাচল।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘শিক্ষা উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত, মানি না মানি না’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘তিতুমীর আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘টিসি না টিইউ, টিইউ টিইউ’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কী করে’, ‘প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, চলবে না চলবে না’, ‘অধ্যক্ষের সিন্ডিকেট, মানি না মানবো না’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের সহযোগী সদস্য অহিদুজ্জামান অভি বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত এলিটিস্ট শিক্ষা সিন্ডিকেট ভেঙে এক নতুন যুগের সূচনা হবে তিতুমীরিয়ানদের হাত ধরে। আমরা হাতে গোনা কিছু মোড়ল বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্থচোষা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কুক্ষিগত শিক্ষা সিন্ডিকেট ধ্বংস করে, শিক্ষাকে সর্বস্তরের জনতার দ্বারে পৌঁছে দেবো। এখনই সময়। এই মুহূর্তে শিক্ষার সংস্কার প্রয়োজন।

অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাখালী রেল ক্রসিং হয়ে আমতলী মোড়ে এসে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে ইনকামিং ও আউট গোয়িং সব দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুলশান ক্রাইম ডিভিশনের পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তারেক মাহমুদ বলেন, বর্তমানে আমরা আমতলীতে অবস্থান করছি। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে রাস্তায় যান চলাচল শুরু করার কোন ব্যবস্থা করবেন কি না এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। আমরা বর্তমানে আমাদের অবস্থানে আছি।

এর আগে, আজ একনেক মিটিং শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ৭ কলেজকে নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি কমিটি কাজ করছে। তবে তিতুমীর কলেজকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আন্দোলন করা ভালো। তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি দিতে হবে। তিতুমীর কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে ফিরে যেতে চায়। তারা জনদুর্ভোগ চায় না। শিক্ষার্থীদের একসময় পরীক্ষায় বসতে হবে। পড়ালেখা না করে পরীক্ষা দিলে তাদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবি মুখে সরকার কোনো অযৌক্তিক কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একে অপরকে চায় না। তাই এই কলেজগুলোকে নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে তবে দাবি বাস্তবায়নে সময় বেঁধে দেওয়া কাঙ্ক্ষিত নয়।

তবে শিক্ষার্থীরা তার বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-১৩

- বিজ্ঞাপন

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর