দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের পর বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার পর তিনি মুক্তি পান।
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ২০০৪ সালের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় হাইকোর্ট রায় দিয়ে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দেন। খালাস পাওয়া বাকি চারজন হলেন- সিইউএফএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, মহাব্যবস্থাপক কে এম এনামুল হক, ডিজিএফআইর সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন।
অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্য পাঁচ আসামির সাজা কমানো হয়েছে। বিচারিক আদালতের যাবজ্জীবন রায় পাওয়া পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর করা হয়। এনএসআইর সাবেক কর্মকর্তাসহ চারজনের সাজা ১০ বছরে নামিয়ে আনা হয়।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রসহ দুটি মামলার সূত্রপাত হয়। ২০১৪ সালে বিচারিক আদালত এসব মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অস্ত্র আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটি হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ওঠে।
লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী শিশির মনির। মামলার রায়ে হাইকোর্ট উল্লেখ করেন, মামলার প্রমাণাদির ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পর্যাপ্ত নয়।
মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি ইতোমধ্যে মারা গেছেন, যার ফলে তাদের আপিল খারিজ করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী রয়েছেন, যার অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি এবং রায় সংশ্লিষ্ট এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলাগুলোর এই রায় বিচার বিভাগের কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।