সাইদুর জামান (রাজা)শার্শা প্রতিনিধি: করোনা দুর্যোগের কারণে সরকারি নির্দেশে দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করায় চলছে লকডাউন। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যশোরের শার্শা উপজেলার কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের পরিবারে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় চলা এসব শিক্ষকদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে না আসায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এ সমস্ত শিক্ষকদের। যশোরের শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে প্রায় ৫৬ টি কিন্ডারগার্টেনে ৫ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োজিত রয়েছেন। এরা প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়। এমনকি শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। এটা দিয়ে আর প্রাইভেট টিউশনের ফি দিয়ে চলত শিক্ষকদের অস্বচ্ছল পরিবারের ভরণপোষণ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতন যেমন বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে প্রাইভেট টিউশন। ফলে কোনোদিক দিয়েও তারা উপার্জন করতে পারছে না। পারছেন না মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতে। এমতাবস্থায় সরকারী ভাবে আর্থিক অনুদান ও সহজ শর্তে ঋণ পেতে অবস্থান ধর্মঘট ও মানববন্ধন করতে রাস্তায় দাড়িয়েছেন তারা। শিক্ষকরা বলেন, কেজি স্কুলের শিক্ষকতা আর প্রাইভেট পড়িয়ে কোনোরকম পরিবার নিয়ে চলতাম। এমনিতেই ঠিকমতো বেতন পাই না, তার উপর করোনায় লকডাউন। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছি। অভিভাবকরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা বাড়িতে লেখা পড়া করছেনা। এজন্য যে সমস্ত এলাকায় শুধুমাত্র রেড জোন এলাকা হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে। সে সমস্ত এলাকা বাদে অন্যান্য এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষ ভাবে আহবান করছি। কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়েশন, শার্শা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহারাব হোসেন জানান, একদিকে যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষকরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শত শত পরিবার। কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের শার্শা উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা কোনো বেতন দিচ্ছে না। ওরা বেতন না দিলে তো শিক্ষকদেরও বেতন হবে না। তাছাড়া কেজি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনা। এই দুর্যোগকালীন সময়ে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় আমাদের পরিবারে হাহাকার বিরাজ করছে। অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরকারি অনুদান এবং সহজ শর্তে ঋণ একান্ত ভাবে আবেদন করছি।