Tuesday, September 26, 2023

বাঘারপাড়ায় ব্যাংক থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা গুনতে গুনতে সভাপতি উধাও

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যালয়ের টাকা উত্তোলন করতে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। যৌথ স্বাক্ষরে তিন লাখ টাকা উত্তোলনের পর তঁারা দুজনে ব্যাংক ব্যবস্থাপকের কক্ষে বসে টাকা গুনছিলেন। কেবল দুই লাখ টাকা গণনা শেষ হয়। এ সময় সভাপতির মুঠোফোনে একটি কল আসে। এ সময় তিনি মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে এবং এক লাখ টাকা গুনতে গুনতে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান। চেষ্টা করে সেই টাকা উদ্ধার করতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। অবশেষে ওই টাকা উদ্ধারের জন্য তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকে গত সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে বাঘারপাড়া থানায় অভিযোগ দেন নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন। নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্যদের সভাপতি হলেন গিয়াস উদ্দিন হিরা(৪০)। তিনি উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আনসার আলী মোল্যার ছেলে। তিনি উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া কলেজের ক্রিড়া শিক্ষক এবং নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক। লিখিত অভিযোগে এমদাদ হোসেন উল্লেখ করেন, তিন মাস আগে নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে পিবিজিএসআই স্কিমের আওতায় পঁাচ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ আসে। টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে ছিল। কয়েকদিন আগে ওই টাকা থেকে তিনি ও সভাপতি যৌথ স্বাক্ষরে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকা থেকে অবশিষ্ট দুই লাখ এবং বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে এক লাখ মোট তিন লাখ টাকা উত্তোলনের জন্য গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সভাপতি গিয়াস উদ্দিন হিরাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সোনালী ব্যাংক নারিকেলবাড়িয়া শাখায় যান। যৌথ স্বাক্ষরে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করার পর তঁারা ব্যাংকের শাখার ব্যবস্থাপকের অফিস কক্ষে বসে টাকা গণনা করছিলেন। দুই লাখ টাকা গণনার পর সভাপতির মুঠোফোনে একটি কল আসে। এ সময় তিনি মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে এবং এক লাখ টাকা গুনতে গুনতে ব্যাংকের বাইরে চলে যান। এরপর তিনি তঁাকে মুঠোফোনে কল করলে তিনি ব্যাংকে আসছেন বলে জানান। এর ১০ মিনিট পর কল করলে তিনি জানান, তিনি একটি সালিশে আছেন, সালিশ শেষ করে টাকা নিয়ে স্কুলে আসবেন। তিনি বিদ্যালয়ে না আসায় তঁার মুঠোফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিকেলে বিদ্যালয়ের এক কর্মচারিকে তঁার বাড়িতে পাঠানো হয়। তিনি তঁাকে শুক্রবারে টাকা দিবেন বলে জানান। তিনি এ সময় তঁাকে জানান, যদি অন্য লোকদের বলা হয় তাহলে তিনি টাকা দিবেন না, যা পারবে করবে। এদিন বিকেলে পুনরায় সভাপতিকে কল করে তঁাকে বিদ্যালয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, তিনি শুক্রবারে টাকা দেবেন। যদি অন্য লোকদের বলেন তাহলে তিনি টাকা দিবেন না, যা পারবেন করবেন। এমদাদ হোসেন বলেন, ‘কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে বিদ্যালয়ের টাকা উদ্ধারের জন্য সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না জানতে পারিনি। এ ব্যাপারে গিয়াস উদ্দিন হিরার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহাদত হোসেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিয়ষটি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ