সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে ইঞ্জিন বিকল হওয়া দুটি ট্রলারে তিন দিন ধরে ভেসে থাকার পর ২৩ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া জেলেদের আজ রোববার দুপুরে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস বুড়িগোয়ালিনি থেকে বরগুনায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিসের সহকারী বন সংরক্ষক এম, কে, এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া অভয়ারণ্য কেন্দ্রের সদস্যরা মাইটার খাল এলাকায় নিয়মিত টহলকালে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে সাগরের ঢেউয়ে ভাসতে থাকা ২টি ট্রলার দেখতে পায়। ট্রলারের লোকজন তাদের হাতে থাকা গামছা ও বাংলাদেশের পতাকা নেড়ে সাহায্য প্রার্থনা করে।
বনবিভাগের টহলদল ভাসমান দুটি ট্রলারসহ ২৩ জন জেলেকে উদ্ধার করে এবং স্থানীয়ভাবে তাদের সেবা সুস্থ্য করে রোববার দিবাগত রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস বুড়িগোয়ালিনিতে নিয়ে আসা হয়। বিকল ট্রলার দুটি মেরামতসহ রোববার দুপুরে তাদেরকে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
বিকল ট্রলারের জেলে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার গোডাউনপাড়া স্টেডিয়াম রোড়ের মো. জামাল (৬৩) জানান, উদ্ধার হওয়া সকল জেলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। তারা এম.ভি মা ও এম.ডি লিমা নামক দুইটি ফিশিং ট্রলারের জেলে। গহীন সাগরে মাছ ধরার সময় গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাদের ট্রলার দুটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। কোন ভাবেই ইঞ্জিন মেরামত করতে না পারায় এবং সাহায্যের জন্য আশে পাশে কোনো ট্রলার না পাওয়ায় তারা সাগরের পানিতে ভাসতে থাকে।
ইতোমধ্যে সাগরে ঝড় সৃষ্টি হওয়ায় বৈরী আবহাওয়ায় পতিত হয়ে তারা জীবননাশের হুমকিতে পড়ে যায়। ট্রলার দুটি ভাসতে ভাসতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া অভয়ারণ্য কেন্দ্রের কাছে এলে টহল দল তাদেরকে উদ্ধার করে। তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থার পর ট্রলার দুটি মেরামত করে তাদেরকে নিরাপদে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ, খুলনা এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা বন বিভাগ সুন্দরবন রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় সাগর বা নদীতে বিপদগ্রস্ত জেলেদের উদ্ধারের মাধ্যমে মানবিক কর্মকান্ড সম্পাদন করে থাকে। তিনি আরো জানান, ইতোপূর্বেও গত ২০ আগস্ট বনবিভাগের স্মার্ট টহল টিম সুন্দরবনের হলদেবুনিয়ার রায়মঙ্গল নদী হতে ভাসমান ২৪ জন জেলেকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
গত ২১ আগস্ট পুষ্পকাঠি অভয়ারণ্য এলাকা থেকে ৬৫ জন জেলেকে নিরাপদে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গত ২ আগস্ট মান্দারবাড়িয়া অভয়ারণ্য কেন্দ্র এলাকা হতে ৭ জন জেলেকে উদ্ধার করে নিরাপদে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আর কে-০৪