মোঃ মাসুদুর রহমান শেখ বেনাপোলঃবেনাপোল স্থলবন্দর আধুনিকায়নে সরকারী ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে গেল ১৫ বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা মুল্যের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে।এতে ভারতের সাথে আমদানি,রফতানি বানিজ্যে গতি বাড়ায় সরকারের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমান বিগত সরকারের যে কোন সময়ের চেয়ে বেড়েছে। এ ধারা অব্যহত থাকলে সামনের দিনে বানিজ্য আরো তরান্বিত হবে বলছেন বানিজ্যিক সংশিষ্টরা। বেনাপোল বন্দর সংশিষ্টরা জানান, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনের অধীনে বেনাপোল দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি,রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০২ সালে মর্যাদা পায় স্থল বন্দরের।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি বানিজ্যে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আসে। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। তবে বিগত সরকারগুলোর সময়ে বন্দরটি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না থাকায় বানিজ্য ও রাজস্ব দুটাতেই কাঙ্খিত অর্জন আসতোনা। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব অনুধাবন করে অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দেয়। গেল ১৫ বছরে বন্দর আধুনিকায়নে সরকারী ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ব্যয় করা হয় ৬৮৫ কোটি টাকা। যা ইতিপূর্বের সরকারগুলো এ উন্নয়ন করতে পারেনি। উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যায়ে কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল।যেটি নির্মান কাজ শেষ হলে একসাথে ১২০০ ট্রাক পার্কিং করতে পারবে, ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমি অধিগ্রহন, ১৯৩ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বাস ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ৩০ কোটি টাকার জায়গা অধিগ্রহন , ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা, ৩৯ কোটি টাকার বাউন্ডারী ওয়াল,৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টাফ ডরমিটোরি ভবন এবং ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় পণ্য পরিমানের ২ টি স্কেল। এসব অবকাঠামো ও অটমেশন সুবিধায় ইতিমধ্যে রাজস্ব ও আমদানি রফতানি বানিজ্যে গতি বেড়েছে বন্দরে। বন্দরের পরিসংখন মতে ২০১১-১২ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস থেকে রাজস্ব আয়ের পরিমান ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসে রাজস্ব অর্জনের পরিমান বেড়ে দাড়িয়েছে ৫৭৮৬ কোটি টাকা। একই সময়ে আমদানির পরিমান ১২ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে গত অর্থবছরে পরিমান ছিল ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন। বেনাপোল বন্দর কার্গো বেহিকেল টার্মিনাল নির্মান প্রকৌশলী মশিউর রহমান জানান, বন্দরের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যকার বানিজ্য আরো সহজ করবে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জার্তিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব পায় সরকার। বর্তমান সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের। সরকার আন্তরিক হওয়ায় কাঙ্খিত অবকাঠামো বাড়ছে বন্দরে। এতে সরকার ও ব্যবসায়ী সবাই লাভবান হচ্ছেন। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, বিগত সরকারগুলোর চাইতে বর্তমান সরকার বন্দরে উন্নয়নে বেশি আগ্রহী হওয়ায় বানিজ্য সম্প্রসারন ঘটেছে। এতে আমদানি ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে। বেনাপোল আমদানি,রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বর্তমান সরকার নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও বেনাপোল বন্দেরের উন্নয়ন কাজ চলমান রেখেছে। বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দরের আয়াতন বেড়ে দাড়িয়েছে ৯০ একর। যেখানে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য রক্ষনা বেক্ষনের ধারন ক্ষমতা হয়েছে। বিগত সরকারগুলো বন্দর উন্নয়নে দরদী না হওয়ায় নানান প্রতিবন্ধকতায় বানিজ্যে সম্ভব হতো না। বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, গত ১৫ বছরের উন্নয়নে বেনাপোল বন্দর এখন আন্তর্জাতিক বন্দরে রুপ নিয়েছে। সরকার আন্তরিক হওয়ায় এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে এসব অবকাঠামোগত উন্নয়ন অধিকাশ শেষ হয়েছে কিছু চলমান আছে।
রাতদিন ডেস্ক/ জয়-০২