Tuesday, September 26, 2023

কেরালায় ‘বাংলাদেশি নিপাহ’ শনাক্তের দাবি ভারতের

ভারতের কেরালা রাজ্যের কোঝিকোড জেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যে দুজন মারা গেছেন, তারা এই ভাইরাসের বাংলাদেশি ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। আর বাংলাদেশি এই ধরনটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার রাজ্য সরকার সংসদ অধিবেশনে কেরালায় নিপাহ ভাইরাসের বাংলাদেশি ধরনের উপস্থিতির বিষয়ে এই দাবি করেছে।

দেশটির ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, নিপাহ ভাইরাসের বাংলাদেশি এই ধরনটিতে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। তবে আক্রান্তের হার বেশি নয়।

রাজ্যের কোঝিকোড জেলায় সম্প্রতি দুই ব্যক্তির যে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে, তা নিপাহ ভাইরাসের কারণে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জর্জ। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালায় নিপাহ ভাইরাসে প্রথম মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে গত ৩০ আগস্ট। আর দ্বিতীয় রোগী মারা গেছেন ১১ সেপ্টেম্বর।

প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস মোকাবিলায় কেরালা সরকার কোঝিকোডে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে। একই সঙ্গে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে জেলার বাসিন্দাদের মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রাজ্যের বাসিন্দাদের এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। কারণ যারা আক্রান্তদের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে ছিলেন তারা চিকিৎসাধীন আছেন।

কেরালায় এই নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে চারবার নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ওই বছর ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই রাজ্যে প্রথম নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ওই সময় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ২৩ জনের মধ্যে প্রাণহানি ঘটে ২১ জনের। পরে ২০১৯ ও ২০২১ সালে কেরালায় আরও দুজনের প্রাণ যায় এই ভাইরাসে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনও চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। সংক্রামিত বাদুড়, শূকর বা অন্যান্য প্রাণীর সংস্পর্শের মাধ্যমে মানবদেহে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে।

১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে শূকরের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা খামারি এবং অন্যান্যদের শরীরে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের তীব্র শ্বাসকষ্ট, এনসেফালাইটিস, জ্বর, মাথা ধরা, পেশির যন্ত্রণা, বমি ভাব হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ হয়।

বাদুড় নিপাহ ভাইরাসের প্রাকৃতিক বাহক। এর আগে বাংলাদেশেও খেজুরের রস পানে বাদুড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিকভাবে অন্তত ১৬টি প্রাণঘাতী সংক্রামক ব্যাধির তালিকা করেছে; সেই তালিকার প্রথম দিকের একটি নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ।

ডব্লিউএইচও এই ভাইরাসটিকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য বৃহত্তর হুমকি শনাক্ত করলেও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর এটি মোকাবিলায় কোনও প্রকল্পই নেই, বলছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা অ্যাকসেস টু মেডিসিন্স ফাউন্ডেশন।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৫

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ