যশোর পৌরসভার স্টোর কিপার কাম সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমান এখন ফুলে ফেঁপে ঢোল হয়ে গেছে। চব্বিশ বছর চাকুরি করে তিনি এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যা তার আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্যতা নেই বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যশোর পৌরসভার সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমান চব্বিশ বছর আগে চাকুরিতে যোগদান করেন। এরপর থেকে সে যশোর পৌরসভার অধীনস্থ বাসা-বাড়ির নকশা তৈরি, জায়গা – জমির মাপ জোক ও বিরোধ নিষ্পত্তির নামে বিভিন্ন ব্যক্তি – প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অবৈধভাবে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। আর এই অনৈতিক উপার্জনের অর্থ দিয়ে হাফিজুর রহমান হাফিজ পৌরসভার বকচর হুসতলা চক্ষু হাসপাতালের সামনে প্রায় সাত শতক জমি ক্রয় করে সেখানে পাঁচতলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট বিলাস বহুল আলীশান বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বকচর হুসতলা চক্ষু হাসপাতালের সামনে বর্তমানে এক শতক জমির দাম কমপক্ষে পনের লাখ টাকা। সেই হিসেবে সাত শতক জমির দাম এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা। এছাড়া তিনতলা পর্যন্ত তিনি যে বিলাস বহুল বাড়িটি নির্মাণ করেছেন, তার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। সর্বমোট হাফিজুর রহমান এই বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। যা তার বৈধ আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। এছাড়া নিজের ও স্ত্রীর নামে অঢেল সম্পদ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে।
যশোর পৌরসভার কর্মচারী হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত হলে দুর্নীতির আরো অজানা তথ্য বেরিয়ে পড়বে বলে জানা গেছে। অদৃশ্য ক্ষমতার বলে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমান। তিনি নিজেকে পৌরসভার সার্ভেয়ার পরিচয় দিলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি একজন স্টোর কিপার। তবে এই কুটকৌশলী দুর্নীতিবাজ হাফিজ তার নিজ গ্রাম মনিরামপুর উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে নিজেকে কখনো সার্ভেয়ার, কখনো ইঞ্জিনিয়ার, কখনো প্রভাবশালী কর্মকর্তা বলে জাহির করে থাকেন। এদিকে যশোর মনিহার থেকে মুড়লী পর্যন্ত ৬ লেনের যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে সে কাজেও বাঁধাগ্রস্থ করছেন হাফিজুর রহমান। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহের সময় নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা বিপ্লব, বেজপাড়ার আরাফাত, ওয়াপদা পাড়ার আসাদুজ্জামানসহ একাধিক ব্যক্তি সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মনিহার-মুড়লী রাস্তার দু’ধারে সরকারি ড্রেন নির্মাণের সময় তিনি নিজেকে পৌরসভার সার্ভেয়ার পরিচয় দিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্সের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাস্তার দু’ধারে যে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে তা পৌরসভার জায়গায় না হলেও বাঁধা সৃষ্টি করে আর্থিকভাবে ফাঁয়দা লোটার চেষ্টা করছেন বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
সচেতন এলাকাবাসী তদন্ত পূর্বক সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। এব্যাপারে যশোর পৌরসভার স্টোর কিপার কাম সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। এসব ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন মি.হাফিজুর।
বিশেষ প্রতিনিধি