শফিয়ার রহমান, মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ হুরগাতী গ্রাম বেগুন গ্রাম নামে খ্যাত। প্রায় দুই যুগ ধরে এ গ্রামের চাষিরা সব থেকে বেশি বেগুন চাষে সফলতা অর্জন করায় হুরগাতী গ্রামকে বেগুন গ্রাম বলা হয়ে থাকে।
তথ্যনুসন্ধানে জানাযায়, মণিরামপুর উপজেলার হুরগাতী গ্রামে সব থেকে বেশি বেগুন চাষ হয়। এ গ্রামে মাঠের পর মাঠ বেগুনের সবুজ পাতায় ছায়া থাকে। গ্রামের নারী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে সবাই মিলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেগুন ক্ষেতে কাজ করে। হুরগাতী গ্রামের বেগুন উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় বড় কাচা বাজারে সরবরাহ হচ্ছে বলে জানাচ্ছে।
বেগুন চাষ অধিক লাভ জনক ফসল হওয়ায় উপজেলার প্রায় সব গ্রামের কৃষকরা বেগুন চাষে বেশি ঝুকে পড়ছে। রমজান মাসে বাজারে বেগুনের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি হওয়ার কারণে এবছর চাষিরা অধিক লাভবন হচ্ছে।
বুধবার (২৯ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, হুরগাতী গ্রামের নারী-পুরুষ ও ছেলে-মেয়েরা মিলে মিশে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেগুন ক্ষেত পরিচর্যা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে।
অপর দিকে এ বছর আকাশ বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ পাম দিয়ে ক্ষেতে পানি দিতে হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
এছাড়াও সার, কীটনাশকের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি হওযায় চাষীরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাকিতে কিনে জমিতে প্রযোগ করছে। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা নিন্মমানের কীটনাশক গুদামজাত করে বেগুন চাষিদের হাতে তুলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ চাষীদের। এবছর বেগুনের দাম অনেক বেশি হওয়ার কারণে কৃষক বুক ভরা আশা নিয়ে নিরালস ভাবে ক্ষেতে কাজ করে চলেছে।
বর্তমানে ৪০ শতক জমিতে ফুল আসা পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা মত খরচ হচ্ছে। আর বেগুন গাছে রোগ বলায় কম হওযায় সপ্তায় ২/৩ দিন বেগুন তুলছে চাষীরা। দেখা যায়, ক্ষেত থেকে কেউ বস্তা বা ঝুড়িতে করে রাস্তায় এনে পানির মধ্যে দিয়ে ধুচ্ছে। আবার কেউ পোকা বেগুন, ভাল বেগুন আলাদা করছে। প্রতিদিন সকাল বিকাল হুরগাতী মাঠে বেগুন তুলার ধুম পড়ে। মাঠে গেলে বেগুন গাছ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
কৃষকরা বেগুন গাছে প্রচন্ড কীটনাশক স্প্রে করার কারণে বিষের প্রচন্ড গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বেগুন চাষি আতিয়ার রহমান জানায়, আমি ৬০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছি। আমার বেগুন চাষ করতে খরচ হয়েছে ১লক্ষ টাকা মত। আমি এপর্যন্ত বিক্রি করেছি ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তিনি আরো জানায় দ্বিতীয় রোজার দিন মনিরামপুর বাজারে পাইকারী বিক্রি করে ছিলাম প্রতি কেজি ৫০ টাকা। এখন পাইকারী কেজি প্রতি ২৮ থেকে ৩২ টাকা দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবছর আমার সব খরচ বাদ দিয়ে দেড় লক্ষ টাকা লাভ হবে বলে আশা করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতু রাজ সরকার জানান, এবছর উপজেলায় বেগুন চাষ হয়েছে ১৭৭ হেক্টর জমিতে। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে আছি। মাঠে ফসলি জমিতে গিয়ে কৃষকদের ফসল ভাল করার জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছি। যে কারণে কৃষক ভাল ফসল ফলাচ্ছে। আবার তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকেও নজর রাখছি।
আর কে-১০