যশোরের ঝিকরগাছায় কোচিং থেকে ফিরে গলায় শাড়ি পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৭ম শ্রেণির একছাত্রী। তার নাম অনি রায়। অভিযোগ উঠেছে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে একদল বখাটে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল।
সোমবার (২৭ মার্চ) রীতিমত মেয়েটিকে ধাওয়া দেয়। এতেই জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণার সৃষ্টি হয় মেয়েটির। সে ঘরের দরজা আটকে গলায় ফাঁস দিয়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে। তবে কিছু ক্লু রেখে গেছে, যা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার খুব বেশি বেগ পেতে হবে না-এমনটিই বলছেন মেয়েটির পরিবারসহ স্থানীয়রা।
এদিকে আজ সোমবার সকালে উপজেলার হাসপাতাল রোড মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী অনি রায় আত্মহত্যা করলো।
অনি রায়ের ভাই অর্ঘ্য রায় জানান, বিএম হাই স্কুলের কয়েকজন ছেলে আমার বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সোমবার সকাল ৮টার দিকে কোচিংয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে অর্ঘ্য রায় বলেন-ফেরার পথে ওই বখাটেরা বোনকে উত্ত্যক্ত করেছিল। তাদের ধাওয়ায় বোন অনি বাড়ি ফিরে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর আশপাশে খোঁজখবর নিয়ে ধাওয়া করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, অনি স্কুল থেকে ফিরে তার এক বান্ধবীকে ফোন করে কিন্তু রিসিভ হয়নি। মোবাইল ফোনটি ক্লু উদঘাটনে কাজে লাগতে পারে। তিনি বলেন মায়ের চিৎকারে ঘরের দরজায়ে হাত দিয়ে বুঝতে পারি ভেতর থেকে ছিটকেনি দেয়া। পরে ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে পািই, বোন আমার ঝুলে রয়েছে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে বোনকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় জড়িত বখাটেদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান অর্ঘ্য রায়।
ঝিকরগাছা বিএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, “ঘটনা শুনে বাসায় গিয়েছিলাম। কারা তাকে উত্ত্যক্ত করতো, বিষয়টি আমার জানা নেই। অনি রায় ছাত্রী হিসেবে ভালো, খেলাধুলাতেও ভালো ছিল। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। খোঁজখবর নিচ্ছি, যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা বলছেন-বাড়ি ফিরে যে বান্ধবীকে ফোন করেছিল অনি, সেই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ক্লু বেরিয়ে আসবে। হতে পারে ওই বান্ধবী জানতো কারা উত্ত্যক্ত করতো। তাকে হয়তো ধাওয়া করার বিষয়টি বলতে চেয়েছিল অনি রায় কিন্তু রিসিভ না করায় হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে বসেছে। অনি রায়ের মোবাইল ফোনটি পুলিশ ঘেটে দেখলে অপরাধীদের সহজে সনাক্ত করতে পারবে।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, “বখাটেদের ধাওয়ায় স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে এমন তথ্য আমার জানা নেই। তবে সকালে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনে আমরা চেষ্টা করছি। জানতে পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে-বলেন ওসি।”
রাতদিন সংবাদ/আর কে-২০