Friday, March 29, 2024

ভাড়ায় মিলছে প্রেমিকা, রমরমা প্রেমের ব্যবসা

- Advertisement -

বিয়ের জন্য এই মুহূর্তে কোনও ধরনের প্রস্তুতি নেই। কিন্তু পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। আপনি বিয়েতে আগ্রহী নন। তখন এই বিয়ের চাপ সামলাবেন কীভাবে? চীনের নাগরিকদের জন্য এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে স্থানীয় একটি ওয়েবসাইট। যেখানে নিবন্ধন করলেই ভাড়ায় মিলবে প্রেমিকা। যাকে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রেমিকা, স্ত্রী কিংবা বান্ধবী হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেন। তুলতে পারবেন ছবিও। যেতে পারবেন ঘুরতে।

- Advertisement -

কিন্তু এসবের জন্য আলাদা আলাদা অর্থ পরিশোধ করতে হবে সেই কথিত প্রেমিকাকে। আর এর বিনিময়ে পরিবার থেকে দেওয়া বিয়ের চাপ থেকে হয়তো রেহাই মিলবে। চীনে এই ব্যবসা ব্যাপক রমরমা হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত প্রেমিকা ভাড়ায় নেওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে দেশটির তরুণদের মাঝে। তবে ওই ওয়েবসাইটে একইভাবে প্রেমিকও ভাড়া পাওয়া যায়।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বিশেষ এক প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর ব্যবসার খবর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চীনের স্থানীয় গণমাধ্যম চাও নিউজের একজন সাংবাদিক প্রেমিক হিসাবে ৮৯ওয়াইএন ডটকমে নিবন্ধন করেন। বান্ধবী বা প্রেমিকা ভাড়া নেওয়ার জন্য প্রথমেই এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হয়।

নিবন্ধন করার পরপরই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট করা মুমু (ছদ্মনাম) নামের এক তরুণী এই সাংবাদিকের সাথে স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে যোগাযোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি করা ওই তরুণী নিজেকে ২৯ বছর বয়সী হিসাবে বর্ণনা করেন।

তার দৈনিক ভাড়া এক হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার ৫১৫ টাকা)। এছাড়া অগ্রিম হিসাবে তাকে আরও অতিরিক্ত ৫০০ ইউয়ান দিতে হয়। কোথাও তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য দিতে হবে আরও ৩৫০ ইউয়ান। মুমু তার প্রেমিক সাংবাদিককে বলেছিলেন, যদি প্রথমে তার ছবি দেখতে চান, তাহলে তাকে সেজন্য আরও ২০ ইউয়ান ফি দিতে হবে।

ওই সাংবাদিক ভাড়ায় পাওয়া প্রেমিকার এসব প্রস্তাবে রাজি হন এবং চলতি মাসের শুরুর দিকে মুমু প্রেমিকার স্বাদ দেওয়ার জন্য তার সাথে দেখা করতে যান। এ জন্য চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হেনান প্রদেশের ঝেংঝো থেকে পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের নানজিং ভ্রমণ করেন তিনি।

মুমু বলেন, তার পূর্ণকালীন একটি চাকরি রয়েছে। মাসিক বেতন ৫ হাজার ইউয়ান। বাংলাদেশি প্রায় ৭৭ হাজার ৫৭৮ টাকা। তিনি বলেন, কেবল অবসর সময়ে ভাড়া করা প্রেমিকা হিসাবে কাজ করেন এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে তার ভাড়া ব্যাপক বেড়ে যায়।

এই তরুণী বলেন, চীনা চন্দ্রবর্ষ, মে দিবসের ছুটি, ড্রাগন নৌকা উৎসব এবং জাতীয় ছুটির দিন ইতোমধ্যে ভাড়া হয়ে গেছে। এসব দিনের জন্য তিনি আড়াই হাজার ইউয়ান ভাড়া নেন।

মুমু বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ব্যস্ত, বিশেষ করে চন্দ্র নববর্ষের সময়। আমি প্রায়ই একই দিনে একাধিক অর্ডার পাই। আমার মনে আছে বেশ কয়েক বছর আগে চন্দ্র নববর্ষের আশপাশের দুই সপ্তাহে আমি মোট ৪০ হাজার ইউয়ানের (বাংলাদেশি ৬ লাখ টাকা) বেশি উপার্জন করেছিলাম।’

তবে ছুটির দিনগুলোতে যখন একাধিক অর্ডার পান, তখন তিনি অন্য তরুণীদের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ পাইয়ে দেন। এ জন্য ক্লায়েন্টের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ ইউয়ান ফি নেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, যদি একদিনের ভাড়া এক হাজার ইউয়ান হয়, তাহলে আমি ফি হিসেবে ২০০ ইউয়ান পাই।

গত কয়েক বছরে এভাবে নিজে প্রেমিকা হিসেবে ভাড়ায় গিয়ে কিংবা অন্যদেরকে প্রেমিকা ভাড়া করে দিয়ে লাখ লাখ ইউয়ান উপার্জন করেছেন মুমু।

এই তরুণী বলেন, তার ক্লায়েন্টরা সারাদেশে বসবাস করেন। তাদের প্রত্যেক বয়স গড়ে প্রায় ৩০ বছর। সাধারণত পরিবার থেকে বিয়ে করার জন্য চাপের সম্মুখীন হয়ে তারা প্রেমিকা ভাড়া করেন বলে জানান তিনি।

মুমু বলেন, তার বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট তাকে তাদের বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে বলেন। কেউ কেউ তাকে তাদের সাথে বিয়ের ছবিও তুলতে বলেন। আবার কেউ কেউ তাকে কনে পরিচয় দিয়ে বিয়ের ভোজসভাও করেন এবং বিয়ের জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে পরিবারকেও দেখান। তবে কিছু ক্লায়েন্ট সমকামীও বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, বেইজিংয়ের এক ব্যক্তি তাকে বেশ কয়েকবার ভাড়া করেছিলেন। বাবা-মাকে দেখানোর জন্য একসঙ্গে ছবি তুলতে তাকে ভাড়া করেন ওই ব্যক্তি।

ক্লায়েন্টদের প্রেমে পড়া যাবে না, এটাই নিজের কাছে নিজের প্রাথমিক শর্ত বলে জানান মুমু। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের হাত ধরতে পারি। যদি তারা যথেষ্ট অর্থ দেন, তাহলে ‘অন্যান্য কাজও’ করি।

ওই সাংবাদিক বলেন, মুমু যখন অন্যান্য কাজের ব্যাপারে কথা বলছিলেন, তখন এর মাধ্যমে তিনি চুম্বন বা শারীরিক সম্পর্ক করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-১৭

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত