সারাদেশে বিনা উসকানিতে বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মামলা-হামলা চালিয়ে বিরোধীদল দমনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, বিরোধী মত দমনে ক্ষমতাসীনরা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপির প্রতি দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্স বলেন, সরকারি দলের মন্ত্রী নেতারা সবসময় বলেন; দেশে সবার রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। বিদেশিদের সামনে তারা বলেন, বিরোধীদলের কর্মসূচি পালনে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকে। বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। তাদের এই বয়ান পুরোটাই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সরকার কর্তৃত্ববাদী শাসন অব্যাহত রাখতে রাজনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। গণআন্দোলনে ভীত হয়ে দমন-নিপীড়ন চালিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানি-প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাণ্ডব সৃষ্টি করছে।
ক্ষমতাসীনরা বিরোধীদলের সভা-সমাবেশেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে অভিযোগ করে প্রিন্স বলেন, বিরোধীদলের কর্মসূচি নয় বরং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে সরকার। তারা বিরোধীদল ও তাদের মতকে দমনে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রিন্সের দাবি, গতকাল চট্টগ্রামে মিছিল পূর্ব সমাবেশ চলাকালে বিনা উসকানিতে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। বেধড়ক লাঠিচার্জ, গুলি, সাউন্ড বোমার হামলায় সমাবেশ পণ্ড করে দেয়। পুলিশের এই সাঁড়াশি অভিযানে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন, গ্রেপ্তার করা হয় ২০ জনকে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমাবেশস্থল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী সুজাউদ্দিনের মালিকানাধীন মুন স্টার কনভেনশন হলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতে বোমা হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ময়মনসিংহের গৌরীপুর সদরে বিএনপির মিছিল চলাকালে পুলিশের উপস্থিতিতে হারুন পার্কের সামনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে। ওই হামলায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য হাফেজ আজিজুল হক, অচিন্তপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল আউয়াল মারাত্মক আহত হন। ময়মনসিংহ উত্তর জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী তানজিল চৌধুরী লিলি, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুজ্জামান সোহেলকেও সন্ত্রাসীরা আহত করে। একইভাবে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা, ধামরাই উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমের গাড়ি বহরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে।
প্রিন্স বলেন, আমরা এই হামলা, গ্রেপ্তার, গুলি, মামলা, দমন নিপীড়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেপ্তারদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-২০