Thursday, April 25, 2024

স্বাস্থ্য বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখাচ্ছে খাজুরার মাতৃসেবা ক্লিনিক

- Advertisement -

প্যাথলজি ডাক্তারের স্বাক্ষর ছাড়াই দেয়া হয় রিপোর্ট। কম্পিউটারে সাজানো থাকে রিপোর্ট ফাইল। রোগীর তথ্য টাইপ করে প্রিন্ট দিলেই বেরিয়ে আসে নানা ধরনের রিপোর্ট। নকল করা হয় চিকিৎসকের স্বাক্ষরও। নেই লাইসেন্স, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ডাক্তার ও নার্স।

এমন ভুয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই চিকিৎসা দিচ্ছে নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে। এ প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। কারণ মাতৃসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের নামে লাইসেন্স নিয়ে যশোর শহরের জেল রোডে চালু রয়েঠে একটি প্রতিষ্ঠান। একই প্রতিষ্ঠানের নামের আগে নিউ লাগিয়ে খাজুরা বাজারে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রতারণা করছে ওই প্রতিষ্ঠানটি।

সিভিল সার্জন অফিসের সূত্রমতে, এ প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থ বছরে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করে। শর্ত পূরণ না থাকায় সিভিল সার্জন লাইসেন্স নবায়ন করেনি। একই নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নবায়ন না করার একটি কারণ। এরপর থেকে অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

অবৈধভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত করতে নিষেধ করা হলেও মানেনি তারা। এর আগে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ডাক্তার মীর আবু মাউদ ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালনের সময় নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন। তখন ওই প্রতিষ্ঠানের অপারেশন থিয়েটারের বেড এসি ও অক্সিজেন পাওয়া যায়নি। একইসাথে ডাক্তার ও নার্স না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়।

লাইসেন্স প্রদান কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্লিনিকের শয্যার অনুপাতে নিজস্ব চিকিৎসকসহ লোকবল, ভবনের আয়তন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের সুনির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে। রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি, অনুমোদিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ওষুধ ও নিজস্ব পরীক্ষাগার থাকতে হবে। যার কোনো কিছুই নেই এ প্রতিষ্ঠানে।

সূত্র জানায়, নতুন বছরেই এ প্রতিষ্ঠানের মালিক ক্লিনিকটি স্থানীয় গ্রাম ডাক্তারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে মাগুরায় থাকেন। আর এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন আব্দুস সালাম নামে এক ব্যক্তি। তবে, প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ব্যবহার করা হচ্ছে আগের মালিকের পরিচয় ও ফোন নম্বর। যেসব রোগী এখান থেকে প্রতারিত হয়ে ব্যবস্থাপত্রের দেয়া নম্বরের ফোন করছেন তাদের ফোন চলে যাচ্ছে আগের মালিকের কাছে। প্যাথলজি রিপোর্ট স্বাক্ষর করছেন ইয়ারুল ইসলাম নামে এক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তবে, সেখানে কোনো প্যাথলজি ডাক্তার বা মেডিকেল অফিসারের স্বাক্ষর থাকছে না।

প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, তারা এটি নতুন কিনেছেন। এখনো সবকিছু করে উঠতে পারেননি। দ্রুত কাগজপত্র ঠিক করে ফেলবেন।

সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো কাগজপত্র নেই। প্রতিষ্ঠানটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। খবর পেয়েছি, নতুন করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠানটি খুলে রোগীদের সাথে প্রতারণা করছে।

সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, জেলায় কোনো অবৈধ প্রতিষ্ঠান চলবে না। ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই নিয়মের ভিতরে থেকে করতে হবে। ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অবৈধ এ প্রতিষ্ঠানসহ সকল বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৬

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত