বিপিএলে একই দিনে দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটারের সেঞ্চুরি। এর আগে দুইবার দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি আসলেও দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটারের সেঞ্চুরি পাওয়ার ঘটনা প্রথম। প্রথমে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন আজম খান। সেঞ্চুরির জবাব সেঞ্চুরি দিয়েই দিয়েছেন উসমান খান। আজম সেঞ্চুরি করেন ৫৭ বলে, উসমান ৫৫ বলে।
২ বলে এগিয়েই কি শেষ হাসি উসমানের! সত্যি তাই হলো মিরপুর শের-ই-বাংলার ২২ গজে।
ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল আজমের। খুলনা টাইগার্সের ব্যাটসম্যান চার-ছক্কার ফোরায়া ছুটিয়ে ১০৯ রান করে দলকে ১৭৮ রানের পুঁজি দেন। দ্বিতীয়ার্ধে উসমান এগিয়েছেন ঠিক একই গতিতে। ১০২ রানে অপরাজিত থেকে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৯ উইকেটের বিশাল জয় উপহার দিয়েছেন।
দুই ইনিংস মিলিয়ে রান হলো ৩৫৭। দুই ‘খান’ মিলে করেছেন ২১১ রান। বাকিরা স্রেফ দর্শক! নাহ তেমনটি নয়। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওপেনার ম্যাক্স ও’ ডউড ৫০ বলে ৫৮ রান করে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন সতীর্থ উসমানকে। দুজনের উদ্বোধনী জুটি ছিল ১৪১ রানের। তাতে জয়ের ভিত পেয়ে যায় চট্টগ্রাম। নেদারল্যান্ডসের ব্যাটসম্যান ম্যাক্স ও’ডউড স্পিনার নাহিদুলের বলে ড্রেসিংরুমে ফিরলেও উসমান দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
তার ব্যাটিংয়ে তেমন প্রাণ না থাকলেও ছিল কার্যকরী। ক্রিকেটীয় ব্যাকরণ কিংবা সুন্দর ড্রাইভ পুলও করেননি। কিন্তু রান তুলেছেন অনায়েসে। ৩৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৭ চার ও ১ ছক্কায়। পরের পঞ্চাশে পৌঁছতে খেলেন মাত্র ২১ বল। সব মিলিয়ে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংসটি সাজান ১০ চার ও ৫ ছক্কায়। তাতে চট্টগ্রামের প্রথম জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ম্যাচ জয়ের নায়কও চট্টগ্রামের এ ব্যাটসম্যান।
আজম পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মঈন খানের ছেলে। বাবার মতোই ছুটেছে তার ব্যাট। মঈন খেলোয়াড়ি জীবনে পেসারদের সুইপ করে ছক্কা উড়িয়েছেন বহুবার। দ্রুততম পেসার ডোনাল্ড, ম্যাকগ্রাকে সুইপ করতেও পিছু পা হননি। আজ আজম ঠিক একই শটে প্রথমে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও পরে মেহেদী হাসান রানাকে গ্যালারির কাছে আছড়ে ফেলেছেন।
প্রথমবার বিপিএল খেলতে এসেই নিজের জাত চেনালেন এ পাকিস্তানি ক্রিকেটার। সরাসরি চুক্তিতে তাকে দলভুক্ত করেছিল খুলনা। প্রথম ম্যাচে ১৮ রানে থেমেছিলেন। আজ সুযোগ পেয়েই খেললেন বড় ইনিংস। বিপিএলে যা পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে বিপিএলের প্রথম আসরে আহমেদ শেহজাদ পেয়েছিলেন শতক। ফিফটি করেছিলেন ৩৩ বলে। তখন হাঁকিয়েছিলেন ৪ চার ও ৩ ছক্কা। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে খেলেন ২৪ বল। ৫৮ বলের ইনিংসে ১৭টি ছিল বাউন্ডারি, ১৮টি ডট।
ইনিংস মেরামত করতে সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু, থিতু হওয়ার পর তাকে আর থামানো যায়নি। ক্যারিয়ার সেরা ১০৯ রানে ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। আজমের সেঞ্চুরির দিনে তামিম ৩৭ বলে খেলেছেন ৪০ রানের ইনিংস। সেখানে প্রথম রান পেতে তাকে খেলতে হয়েছিল ১০ বল। এছাড়া সাব্বির রহমান ১০ রান করেন। বাকিরা নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছেন।
রান উৎসবের ম্যাচে দুই দলের কোনো বোলারই দ্যুতি ছড়াতে পারেননি। চট্টগ্রামের আবু জায়েদ ২৯ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। খুলনার নাহিদুল নিয়েছেন একমাত্র উইকেটটি।
অনলাইনডেস্ক