যশোর শহরের মুজিব সড়কের আলোচিত পঙ্গু হাসপাতালে মফিজুর রহমান শেখকে হত্যার কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ। ফলে প্রমান না পাওয়ায় পুলিশ আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই সালাউদ্দিন খান।
তিনি জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যশোর মেডিকেল কলেজের সহকারী প্রফেসর ডা. বাবলু কিশোর বিশ্বাস মৃতুর কারণ সম্পর্কে উল্লেখ করেন, হাইপোভোলেমিক শকের কারণে মাথা, বুকে, পেটে আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, লিফটের কোনো দুর্ঘটনা ছিলো কি-না এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে গ্লোবাল লিফট টেকনোলজিস কর্তৃপক্ষের চিঠি দেয়া হয়। পরে গ্লোবাল লিফট টেকনোলজিসের টেকনিশিয়ান রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে লিফট বিষয়ে তদন্ত করেন।
তদন্তের পর তিনি পুলিশকে জানান, ঘটনার দিন পঙ্গু হাসপাতালের লিফট শর্ট বা জামপার করা ছিলো। এছাড়া গ্লোবাল লিফট টেকনোলজিসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মঞ্জুরুল কবীর বকুল লিফট সংক্রান্ত মতামত প্রদান করেন যে, ২০১৮ সালে পঙ্গু হাসপাতালে ইতালিয়ান মুভি লিফটি স্থাপন করা হয়। লিফটি তারা নিয়মিত সার্ভিসিং মেইনটেইনস করে আসছেন। যেহেতু লিফটি ইলেকট্রিক যন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয় সেই কারণে যে কোনো সময় লিফটি ত্রুটি হতে পারে। তারা লিফটিতে দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানরা লিফট চেক করে ডোর কনট্যাক্ট শর্ট করা অবস্থায় পান। লিফটি শর্ট থাকার কারণে আউটডোরের সুইচে টিপ লাগলে আউটডোর খুলে যায় এবং লিফট উপরে উঠে যাওয়ায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
আদালতে দাখিল করা ফাইনাল রিপোর্টে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সালাউদ্দিন খান উল্লেখ করেছেন, বাদি পক্ষের সাক্ষিরা ডা. আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে বিল নিয়ে মফিজসহ তার পরিবারের সাথে খারাপ আচারণ করেন বলে অভিযোগ করেন। সেই সাথে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন, ডা. আব্দুর রউফ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের দিয়ে মফিজকে হত্যা করেছেন। কিন্তু পুলিশি তদন্তে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, মফিজুর রহমান শেখ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল তার মা আছিয়া বেগম যশোরের পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পায়ের চিকিৎসার জন্য। ৩১ এপ্রিল মায়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে এসে পঙ্গু হাসপাতালে আসার পর সেখান থেকে দুপুরে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। পরে লিফটের নিচে আন্ডারগ্রাউন্ডে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মফিজুর রহমান শেখকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে তার ছেলে শেখ সোয়েব উদ্দীন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।
রাতিদিন সংবাদ