Wednesday, April 24, 2024

বাঘারপাড়ায় অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানে পাঠদানের অনুমতি : ১৮বছর বন্ধ নেই শিক্ষার্থী

- Advertisement -

বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি : শিক্ষার্থী, অবকাঠামো, শিক্ষাউপকরণ সঙ্কটে প্রতিষ্ঠার পরই বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। চলে যাই প্রায় ১৮বছর। এরপরও পাঠদানের অনুমতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও যশোর শিক্ষা বোর্ড।

অভিযোগ উঠেছে, একটি অসাধুচক্র নিয়োগ বানিজ্য করতে উৎকোচের বিনিময়ে এ অনুমতি সংগ্রহ করেছে। মফস্বল এলাকায় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ন্যূনতম নীতিমালা এখানে মানা হয়নি।

অনুসন্ধানে জানাগেছে,২০০৪সালে ‘রোস্তমপুর দেবীনগর কৈখালী আয়াপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ যশোরের বাঘারপাড়া বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের আয়াপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়।

আয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে চার কক্ষের স্কুলটি প্রতিষ্ঠার সময় টিনের বেড়া ও ছাউনিতে টিন ব্যবহার করা হয়। অনুমতিপ্রাপ্ত নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি থেকে মাত্র ৩’শ গজ দূরেই মাহমুদপুর সিএসসি নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ১কিলোমিটার দুরে মাহমুদপুর দাখিল মাদ্রাসা এবং দেড় কিলোমিটার দুরে মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত আছে।

সর্বশেষ সরকারি নিতিমালা অনুযায়ি কাম্যসংখ্যক বই থাকার বিধান থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে লাইব্রেরির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্কুল ক্যাচমেন্ট এলাকায় জনসংখ্যা সাড়ে ৩ হাজারের (রোস্তমপুর গ্রামে-৬শত, আয়াপুরে-১হাজার ৩৫জন, কৈখালি-১হাজার ৬শত ১০জন) বেশী নয়।

তারপরও গত বছরের ১৩ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির অনুমোদন দেয়।

এরপর একই বছরের ২৫ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি দেয় অস্তিত্বহীন এ প্রতিষ্ঠানের।

নিতিমালায় আছে , মফস্বল এলাকায় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে গেলে, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যটির দুরত্ব হতে হবে ন্যূনতম ২কিলোমিটার, এলাকার জনসংখ্যা হতে হবে দশ হাজার, জমির পরিমান ০.৫০একর, শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা তিনটি, দুইটি অফিস কক্ষ (একটি শিক্ষক ও অন্যটি অফিস), একটি লাইব্রেরি কক্ষ একটি কমনরুম ও তিনটি টয়লেট। এ ছাড়াও প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানে বইয়ের সংখ্যা এক হাজার ও শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রতি শ্রেণীতে ন্যূনতম ৩০ জন। এ সকল শর্ত না মেনেই প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য চুড়ান্ত করতে গত বছরের শেষ দিনে যশোরের একটি পত্রিকায় পাঁচটি পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। যেখানে একজন করে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অফিস সহায়ক, আয়া ও নৈশ প্রহরীর পদ রয়েছে। ইতোমধ্যে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্য শুরু করেছে এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক – সভাপতি।

বাসুয়াড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান সরদার মুঠোফোনে জানান স্কুরের কোন অস্তিত্ব নেই , যুগের পর যুগ বন্ধ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠান । নিয়োগ বানিজ্যের জন্য চলছে সব আয়োজন।

এ বিষয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মতামত জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। ঐ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমার কাছে কেও আসিনি।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান , গত বছরের ৩০ অক্টবর পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রাণালয় পাঠদানের অনুমতি দিত। মন্ত্রাণালয়ের আদেশে আদিষ্ট হয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ড অনুমতি দিয়েছে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত