Saturday, April 20, 2024

দেশকে এগিয়ে নিতে যুবলীগকে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দেশ ও জনগণের প্রতি কর্তব্যবোধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমি যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানাই দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাদের কর্তব্য। আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে দেশের মানুষ এখন একটি সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের নতুন করে আশা পাচ্ছে। এই প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিতে, যুবকরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার এবং তারাই দেশ গড়তে পারে”।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সকাল থেকে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বর্ণিল ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, জাতীয় ও দলীয় পতাকা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফজলুল হক মণির প্রতিকৃতি ও ছবি নিয়ে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে সমাবেশস্থল মানবসমুদ্রে পরিণত হয়। অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশের সড়কসহ রমনা পার্কসহ খোলা জায়গায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের মাটি ও জনসংখ্যা ব্যবহার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। দেশপ্রেম এবং দেশ ও এর প্রতি কর্তব্যবোধ থাকলে তা করা যায়। আমরা তা প্রমাণ করেছি।”

“২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সমাবেশে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নিয়ে তিনি যুবলীগ নেতাকর্মীদের দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার” আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “এভাবে তার (বঙ্গবন্ধুর) আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষকে উন্নত ও সুন্দর জীবন দান করুন”।

প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের এক বছর পর ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”

সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সাবেক যুবলীগ চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল।

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম ও হারুনুর রশিদ প্রমুখ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আ.লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্রীয়, জেলা ও নগর যুবলীগের নেতা-কর্মী ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।

পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী মহাসমাবেশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে তাকে একটি ক্রেস্ট ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি পৃথক চিত্রকর্ম দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন ও যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক লোগো ও ওয়েবসাইট উন্মোচন করেন।

মহাসমাবেশে সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের শহীদদের পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের ছোট ছোট জাতীয় ও দলীয় পতাকা ওড়াতে দেখা যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় বিপর্যস্ত হওয়ায় বিশ্ব দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকটে ভুগছে।”

প্রধানমন্ত্রী “যুবলীগ নেতাদের নিজ গ্রামে গিয়ে পরিত্যক্ত জমিসহ সব জমি চাষাবাদের আওতায় আনার ব্যবস্থা নিতে বলেন, যাতে বাংলাদেশ কখনো দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন না হয়।”

“যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে পণ্যের দাম বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি না রাখার জন্য তিনি আবারও সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন।”

প্রধানমন্ত্রী “যুবকদের বিশেষ করে যুবলীগের সদস্যদেরকে একটি দুর্নীতি-জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান নিয়ে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য কাজ করার” আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, “তার সরকার দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হওয়ায় যুবকদের জন্য অসংখ্য সুযোগ তৈরি করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা মূলত যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ও নির্বিচারে শিল্পায়ন বন্ধ করে আবাদি জমি বাঁচাতে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছেন। এছাড়াও যুবকদের সুযোগ তৈরি করতে হাই-টেক পার্ক ও ইনকিউবেশন সেন্টারও স্থাপন করছেন” বলে জানান।

তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তার সরকার কর্মসংস্থান ব্যাংক ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে এবং স্টার্ট আপ করেছে। যাতে যুবকরা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে ও চাকরির পেছনে না ছুটে অন্যদের চাকরি দিতে পারে।”

তিনি বলেন, “তার সরকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ব্যাংক, বীমা, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলেছে।”

অনলাইন ডেস্ক

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত