স্টাফ রিপোটার ঃ যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার মথুরাপুর পুড়াখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি রবিউল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস জাহানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভয়নগর উপজেলা পরিষদের সামনে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, বর্তমানে স্কুলের সভাপতি রবিউল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস জাহানের ঘুষ-দুর্নীতির কারণে স্কুলটি তার ঐতিহ্য ও সুনাম ধরে রাখতে পারছে না। নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারিসহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে মাদক পাওয়ার মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়েও কোন কর্ণপাত করেন না তারা । তারা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো স্কুল পরিচালনা করছে। বক্তারা আরও বলেন, স্কুলের বর্তমান সভাপতি রবিউল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস জাহান কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সম্প্রতি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী, আয়া ও নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া, এক একটি নিয়োগে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ চেয়েছেন বলেন অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। মানববন্ধনে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে স্মাকরলিপি প্রদান করা হয়। এদিকে, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে কথা বলেন স্কুলের চাকরি প্রার্থীর এক ভাই। তিনি জানান, স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তির সংবাদে আমার ভাই দুইটি পদের জন্য নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই ১ হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে আবেদন করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আমার ভাইকে ব্যক্তিগতভাবে ডেকে তার কাছে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। কিন্তু আমার ভাই টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। অন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের চাকরি দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
দীর্ঘ ৮ বছর যাবত অভিভাবক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মতিয়ার রহমান মোল্লা। তিনি জানান, বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কর্মকান্ডে আমরা অতিষ্ঠ। তারা কাউকেই তোয়াক্কা করছেন না। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডে স্কুলের শিক্ষার্থীরা সহ আমাদের সন্তানরা মনোবল হারিয়ে ফেলছে। তিনি জানান, সম্প্রতি স্কুলে কোমলমতি শিক্ষাথীদের কাছে মাদক পাওয়া গেছে। এবিষয়ে আমরা তাদের প্রশ্ন করলে তারা আমাদের কথা এড়িয়ে যান। এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
এরকম পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিয়ে এখন চিহ্নিত। মথুরাপুর পুড়াখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একজন চাকরি প্রার্থী বলেন, স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে যে কাজটা হয়েছে এটা আসলে খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা চাকরী প্রার্থী। লেখাপড়া করেছি। কিন্তু আজ টাকার জন্য চাকরি পেলাম না। চাকরির আবেদন করার আগেই স্কুলের বর্তমান সভাপতি রবিউল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস জাহানের বলেন- ‘১৫ লাখ টাকা লাগবে, ১০ লাখ টাকা লাগবে’। যদি দিতে পারো তাহলে চাকরিতে আবেদন করো। আর টাকা দিতে না পারলে আবেদন করার দরকার নেই। তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক সরাসরি আমাকে এই কথা বলেছেন।
তিনি সরাসরি বললেল টাকা ছাড়া এখানে কোন চাকরি হবে না। এখানে টাকা ছাড়া কোন চাকরি হয় না। আমি এই ধরনের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অপসারণ চাই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, বিষয়টি আমার অবগত ছিল না। স্মাকরলিপির মাধ্যমে আমি অবগত হয়েছে। বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।