Friday, March 29, 2024

যশোরে রায় দিয়ে রেকর্ড করা বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাসের পদোন্নতি

- Advertisement -

যশোরে একদিনে অর্ধশত মামলার রায় দিয়ে রেকর্ড করা বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাসের পদোন্নতি হয়েছে। তিনি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। পদোন্নতি পেয়ে বুধবার দায়িত্ব বুঝে দিয়েছেন। আইনজীবীরা বলেন, শুধু মামলা নিষ্পত্তি না, যশোরে তিনিই প্রথম লঘু অপরাধে দন্ডিত আসামিদেরকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন। এছাড়া, তিনি আসামিদের বাড়িতে থেকে নৈশ বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেন। প্রবেশনের শর্ত অনুযায়ী আসামিরা বাড়িতে বসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই পড়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখেছেন। বিনা পারিশ্রমিকে সেবামূলক কাজ করেছেন। ধর্মীয় নানা কাজে অংশ নিয়েছেন। দরিদ্রদের বিনামূল্যে আহারের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া, আসামিরা মাদক ও বাল্য বিয়ে বন্ধে প্রচারণা চালিয়েছেন। এছাড়াও তিনি প্রবেশনকালীন আসামির চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অর্থসহায়তার ব্যবস্থা করে দেন। অসুস্থ ও চলাচলে অক্ষম সাক্ষীর ভার্চ্যুয়ালি সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস নিজে লিগ্যাল এইড সম্পর্কে অন্যদেরকে সচেতন করেছেন এবং আসামিদেরকেও এ বিষয়ে প্রচারণা চালাতে উদ্বুদ্ধ করেন।

- Advertisement -

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৮ মে তিনি যশোরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যোগদান করেন। গত তিন বছর চারমাসে ৪২৯ বিচারিক কর্মদিবসে তিনি মোট ৪০৬৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৩ হাজার ৭৬৬টি মামলা নিষ্পত্তি করেন। এরমধ্যে ফৌজদারী মামলা ২ হাজার ৭৮০টি ও দেওয়ানী মামলা ৯৮৬টি। এ সময় তিনি ৫ থেকে ১০ বছরের বেশি পুরানো ৮৪৩টি ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করেছেন।

 

 

 

এছাড়া, গত এক বছরে ২২০ দিনের বিচারিক কর্মদিবসে তিনি ১ হাজার ৫৭৩টি মামলা নিষ্পত্তি করেন। তার মধ্যে ১ হাজার ৩০১ টি ফৌজদারী ও ২৭২ টি দেওয়ানী মামলা রয়েছে। ৬১০টি মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ ১০ বছর ও সর্বনিম্ন এক মাসের কারাদন্ডসহ অর্থদন্ড প্রদান করেন। চেক ডিজঅনার মামলায় গত এক বছরে ৩৪৬টি মামলায় আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে কারাদন্ডের পাশাপাশি সর্বমোট ২২ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। গত এক বছরে ১০ বছরের অধিক পুরানো ১৫৩টি ফৌজদারী মামলা ও পাঁচ বছরের অধিক পুরানো ৩৬৩টি ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করেন। এ মামলায় ১ হাজার ৬৮১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এছাড়া, ১৮৭টি ফৌজদারী মামলায় ২২৬ জন লঘু অপরাধে দন্ডিত আসামিদেরকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় মুক্তি দিয়েছেন।

আসামিরা যথাযথভাবে শর্তপালন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলে আদালতের পক্ষ থেকে তাদেরকে ফুল ও জাতীয় পতাকা উপহার দিয়ে বিদায় দেয়ার ব্যবস্থা করেন। আর কেউ শর্তভঙ্গ করলে তাকে ফের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া তিনি অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীন বলেন, তিনি যশোরে যোগদানের পর আইন অঙ্গনে আমূল পরিবর্তন এনেছেন। অধিকতর আইনচর্চা করে একদিকে যেমন মামলার জট কমিয়েছেন অন্যদিকে প্রতিটি ক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন। বিশেষ করে লঘুদন্ডে দন্ডিত আসামিদের প্রবেশনে মুক্তি দিয়ে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছেন। যা যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপলব্ধি করেছে। তার এসব কর্মকান্ড জেলা আইনজীবী সমিতি শুধু না, সকল সেক্টরের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

রাতদিন সংবাদ

 

 

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত