Saturday, April 20, 2024

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে: আশরাফুল আলম লিটন

মোঃ মাসুদুর রহমান, শেখ বেনাপোল: যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাবেক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেছেন, যা কিছু ক্ষতিকর, যা কিছু মানুষের অনিষ্টের কারন, যা কিছুতে মানুষের কল্যান বহন করতে পারে না এসব অশুভ আদর্শ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছিল না।

যা কিছু মানুষের মঙ্গল বহন করে যা কিছু মানুষের শান্তি যোগায় যা কিছু মানুষের জন্য কল্যানকর এসব শুভ আদর্শ ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মধ্যে। আজ রাজনৈতিক দেওালীয়ার কারনে অমেধাবীদের হাতে রাজনীতি চলে যাওয়ায় সাম্প্রদায়িক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তার সেই আদর্শ আমাদের ধারন ও লালন করতে হবে তবে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব সাম্প্রদায়িকতা। বঙ্গববন্ধুর মধ্যে ছিল মানবিকতা আদর্শ যার জীবন যৌবন দিয়েছে মানুষকে ভালবেসে। তাই তিনি বেঁচে থাকবেন কাল থেকে কালান্তর। যে জাতির জন্য তিনি বার বার জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করছে সেই জাতি তাকে আঘাত করবে, হত্যা করবে তা তিনি কোন দিন বিশ্বাস করতে পারেনি। যশোর ৭১ এর ” বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদিক বাংলাদেশ” এর অনুষ্ঠানে বেনাপোল পৌর বিয়ে বাড়ি (কমিউনিটি সেন্টারে) সভাপতি হিসাবে এসব কথা বলেন আশরাফুল আলম লিটন।

বুধবার বেলা সাড়ে ৩ টার সময় বেনাপোল পৌর বিয়ে বাড়ি যশোর ৭১ এর আয়োজনে বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ” এর আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাবেক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কোলকতা রবিন্দ্র ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচর্য অধ্যাপক ড.পবিত্র সরকার, প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ড. শওকত আরা হোসেন, অপূর্ব শর্মা, কবি সঞ্জীব পুরোহিত, যশোর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর প্রমুখ।

প্রধন বক্তা ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, অসাম্প্রদায়িকতাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের মুল ভিত্তি। তিনি ছোট বেলা থেকেই অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি বন্ধ বান্ধবের সাথে যে আচরণ করতেন তা ছিল সম্পুর্ন অসাম্প্রদায়িক। নিজে মুসলিমলীগের একজন সমদস্য হয়েও অন্য কোন দলের প্রতি তার কোন বিদ্বেশ ছিল না। জাতির জনকের সময় যে চুরি ডাকাতি হয়েছে তার চেয়ে এখন লক্ষ গুন চুরি ডাকাতি হচেছ বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বর্তমান সরকারের এক সময়ের সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সময় পাঠ্য বইয়ের ১৭ টি রচনা পরিবর্তন করে যে নতুন ১৭টি স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে তা পড়লে বাঙালী হবে না হবে পাকিস্থানী। তিনি বলেন কোলকাতায় অধ্যায়নরত অবস্থায় ১৯৪৬ সালে যখন হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়েছিল তখন তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে দাঙ্গা বিরোধী তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন। এবং হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোককে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। এছাড়া শেরে বাংলা, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, মাওলানা ভাসানির নেৃত্বে যে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি এদেশে গড়ে উঠেছিল তিনি ছিলেন তার একজন সমর্থক। তিনি বলেন আজ যে ভাবে দেশে চুরি ডাকাতি ছিনতাই সহ নানা দুর্নিতী চলছে যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তবে তিনি আত্নহত্যা করতেন।

প্রধান অতিথি ড. পবিত্র সরকার বলেন দুই বাংলা ধর্মন্ধ ছিল না। সাম্প্রদায়িকতা তৈরী করে রাজনীতিবিদরা। ভারতের ইতিহাসে ও সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করেছে রাজনীতিবিদরা। তিনি বলেন, আমি পরীক্ষিত হিন্দু মুসলিম এত মিল ছিল যে ছোট বেলায় একই বয়সের ছেলেদের পিতা মাতারা দোস্তী সম্পর্ক সৃষ্টি করত অনেক টাকা পয়সা খরচ করে। আমার জীবনে ও পালকি চড়িয়ে মাত্র ৫ বছর বয়সে মুসলমান ছেলে রহমানের সাথে দোস্তি সম্পর্ক তৈরী করেছিল আমাদের পিতা মাতারা। আমাদের নেতাজী সুভাস বসু একসাথে হিন্দু মুসলমান বসে খেত। নেতাজীকে এতটা ভালবাসতেন আকিত রহমান যে তিনি বলতেন নেতাজী যদি বলত তুমি আত্নহত্যা কর আমি তাই করব।

ড. শওকাত আরা হোসেন বলেন অনেক দেশ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন তবে মুক্তি হয়নি। আমাদের দেশ মাত্র ৯ মাসে জাতির জনকের আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তি হয়েছে। হিন্দু মুসলমানের মধ্যে তিনি পার্থক্য হতে দেন নাই। আজ যে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি হয়েছে এদেশের অনেক হিন্দু ভারতে চলে গেছে। আমাদের এগুলো রোধ করতে হবে। এই মাটি আমার আপনার সকলের। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু মনে করতেন ধর্মভিত্তিক দ্বি- জাতিক তত্বের উপর ভারত বিভক্ত হলে সাম্প্রদায়িকতার কারনে পরহিংসাও পরস্পরের মধ্যে বিরোধ অব্যহত থাকবে । বাস্তবে ও তাই হলো।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত