Saturday, April 20, 2024

কেশবপুরে পল্লী চিকিৎসক সুব্রত হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

যশোরের কেশবপুরে পল্লী চিকিৎসক সুব্রত কুন্ডু হত্যা মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া, অপর এক আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি এম.ইদ্রিস আলী। সাজাপ্রাপ্ত আসামি আকবর আলী কেশবপুর উপজেলার দত্তনগর গ্রামের মৃত রফিউদ্দিনের ছেলে। খালাসপ্রাপ্ত সবুরা খাতুন ওরফে খুকু মনি উপজেলার ভালুকঘর গ্রামের ইউনুস আলী খাঁর স্ত্রী। নিহত সুব্রত কুন্ডু শ্রীরামপুর গ্রামের কার্তিক চন্দ্র কুন্ডুর ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৬ মার্চ রাত নয়টা ৪০ মিনিটে মির্জানগর বউবাজার এলাকায় তার দোকান বন্ধ করে বাইসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। কয়েক মিনিটের মাথায় মির্জানগরের সাবেক মেম্বার সাত্তার খানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে পেছন থেকে গুলি করে। গুলি পিঠে লেগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা কার্তিক চন্দ্র অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করে পরের দিন কেশবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২৭ জুলাই উপরে উল্লেখিত দুই আসামি ও ভালুকঘর গ্রামের ইয়াকুব আলী খাঁর ছেলে ইউনুস আলী খাঁকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন কেশবপুর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম। বাদী ওই চার্জশিটের উপর নারাজি আবেদন জানালে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি যশোর জোনকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সিআইডি পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ মোস্তফা কামাল ওই তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পান। পুলিশ ও সিআইডির তদন্তে একই চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, সাজাপ্রাপ্ত আকবার আলী ও ইউনুস আলী খাঁ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় পালিয়ে বেড়াতেন। সুব্রত কুন্ডুর ডাক্তারি চেম্বারের পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশের ব্যবসা ছিল। ওই রাতে আকবার ও ইউনুস ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওৎপেতে ছিলেন। সুব্রত রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে তারা তাড়া করেন। তখন তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ইউনুস গুলি করেন। এর পরপরই ঘটনাস্থলে মারা যান সুব্রত। আসামিদের পালাতে সহায়তা করেন ইউনুসের স্ত্রী খুকু মনি।
তদন্ত চলাকালে ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ যশোর-মাগুরা মহাসড়কে ডাকাতি করা কালীন পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন প্রধান অভিযুক্ত ইউনুস আলী খাঁ। পরে তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ মোস্তফা কামাল ইউনুস আলীর মৃত্যুর কারণে তাকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে বাকি দু’ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। মঙ্গলবার আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে পলাতক আকবার আলীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন। একই সাথে উপস্থিত আসামি খুকুমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়। আদালত সূত্র আরও জানায়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি আকবার আলী মামলার প্রথম থেকে পলাতক রয়েছেন।

রাতদিন সংবাদ

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত