Saturday, April 20, 2024

সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। এতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্যপণ্যের খরচ পোষাতে না পেরে বাজার থেকে খালি ব্যাগ হাতে ফেরার মতো অবস্থা অনেকের।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রাজধানীর বাজারের ৩২ ধরনের খাদ্যপণ্যের দামের ওঠা-নামার হিসাব রাখে। সংস্থাটির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর গত এক সপ্তাহে চাল, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, মশুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনো মরিচ, আদা, এলাচ, ব্রয়লার মুরগি, চিনি ও ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে।

অন্যদিকে বাজারে কাঁচা মরিচ, শাকসবজি, মাছ, দেশি মুরগি, ফলমূলসহ অন্যান্য খাদ্যের দামও বেড়েছে। এমনকি গুঁড়া দুধ, সাবান, নারকেল-সরিষার তেল ও বিভিন্ন প্রসাধনীর দামও বেড়েছে এ সময়ের ব্যবধানে। তবে এসব পণ্যের দামের ওঠা-নামার হিসাব টিসিবির তথ্যে থাকে না।

টিসিবি বলছে, তাদের তথ্যে গত এক সপ্তাতে বাজারে শুধুমাত্র আমদানি করা হলুদের দাম কমেছে। যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। যদিও এ পণ্য এক বছর আগে ১৪০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হতো। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে এ পণ্যের দাম ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম হলেও বছর ব্যবধানে তা ২১ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সেগুলো সর্বনিম্ন ১ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। যার মধ্যে সবেচেয় বেশি বেড়েছে শুকনো মরিচের দাম। যা এখন প্রতি কেজি ৫০০ টাকা টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়েছে পণ্যটির দাম।

শুকনো মরিচের দাম বাড়ার প্রধান কারণ ছিল কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ২৬০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেসময় তালমিলিয়ে শুকনো মরিচের দামও বাড়ে। তবে কাঁচা মরিচের তুলনায় প্রয়োজন কম হওয়াতে টের পাননি অনেকে।

টিসিবি বলছে, এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম ৬ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে এখন ৫০-৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৫০ টাকার মধ্যে ছিল। একইভাবে চিকন চালের দাম ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা।

এছাড়া বাজারে খোলা আটা ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ময়দা ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ, বোতলজাত সয়াবিন তেল ২ শতাংশ, মসুর ডাল ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, পেঁয়াজ ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগির ডিম ১০ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগির দাম ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া বেড়েছে রসুন, আদার দামও। একটি পরিবারের জন্য এসব পণ্যই প্রতিদিনের জন্য অপরিহার্য।

পণ্যবর্তমান দামগত সপ্তাহের দামশতকরা বৃদ্ধি
চাল (মোটা)৫০-৫৪৪৮-৫০৬.১২
চাল (সরু)৬৫-৭৮৬২-৭৫৪.৩৮
আটা৪৫-৫০৪০-৪২১৫.৮৫
ময়দা৫৮-৬২৫৫-৫৮৬.১৯
সয়াবিন (বোতল)১৮৫-১৯০১৮০-১৮৮১.৯০
পাম (খোলা)১৩০-১৪০১২০-১২৫১০.২০
মসুর ডাল১০৫-১১০১০০-১১০২.৩৮
পেঁয়াজ৩৫-৫০৩৫-৪০১৩.৩৩
রসুন১১০-১৩০১০০-১৩০৫.৪৫
শুকনো মরিচ৪৩০-৪৮০৩৫০-৪০০২১.৩৩
আদা৯০-১২০৮০-১১০১০.৫৩
ব্রয়লার মুরগি১৭০-১৯০১৫০-১৬৫১৪.২৯
চিনি৮২-৮৫৮০-৮২৩.০৯
ডিম (হালি)৪৩-৪৭৪০-৪২৯.৭৬

সূত্র:ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)

এদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কারণ দেখিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হঠাৎ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। এছাড়া ডলারের দাম বাড়ায় বেশকিছু পণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল চাল। এরপর তেল, চিনির দাম বৃদ্ধি এবং শেষে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। এ নিয়ে বিক্রেতারা এ কথা, ওই কথা বললেও ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের এসব কারণকে অজুহাত বলে অভিযোগ করছেন। তাদের অভিযোগ, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরাও সিন্ডিকেট করে ক্রেতাদের পকেট কাটছেন।

 

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত