Saturday, April 20, 2024

বিএনপি নেতা টিএস আইয়ুব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারির পরোয়ানা

ভুয়া এলসির মাধ্যমে প্রায় ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের এমডি তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব (ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব) ও তার স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমানসহ সাত জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮। টিএস আইয়ুব জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। তিনি বাঘাপাড়ার কয়ালখালী গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল বারী বিশ্বাসের ছেলে। গত ২৯ জুন মামলার শুনানি শেষে এ দুই আসামি জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব নাশকতার পরিকল্পনা ও বিস্ফোরক মামলায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালে সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের এমডি টিএস আইয়ুব ও পরিচালক তার স্ত্রী তানিয়া রহমান ঢাকা ব্যাংক ধানমন্ডি মডেল শাখায় যৌথভাবে একটি চলতি হিসাব খোলেন। পরবর্তীতে ক্ষুদ্রাকার ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশি তিন বায়ারের নামে ১৯ পণ্য রপ্তানি করা হবে মর্মে ওই ব্যাংকে এলসি খোলেন। কোন পণ্য বিদেশে রপ্তানি না যাবতীয় কাগজপত্র তৈরী করে ২৬টি রপ্তানি বিল ঢাকা ব্যাংক ধানমন্ডি মডেল শাখায় জমা দেন। এরমধ্যে ১৭টি বিলের বিপরীতে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯৮ হাজার ১২৬ টাকা ট্রান্সফার করেন। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানিকারক ওই টাকা উত্তোলন করেন। তার মধ্যে তিনটি বিলের মূল্যসহ ৪র্থ বিলের আংশিক পাঁচ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ৭০৮ টাকা ব্যাংকে ফেরত দিয়ে বাকি ১৪টি বিলের ২১ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৪১৭ টাকা ব্যাংকে ফেরত না দিয়ে আত্মসাত করেন। ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের এমডি তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব (ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব) ও তার স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমানসহ নয়জনকে আসামি করে মানিলন্ডারিং, দুর্নীতি দমন ও দন্ডবিধি আইনে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
এ মামলা তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় এমডি, পরিচালক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ নড জনকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালিন দুদকের সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা আনিমুল ইসলামের অব্যহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিটে।
অপর আসামিরা হলো ব্যাংক কর্মকর্তা সুলাতানা ফাহমিদা, ব্যাংক কর্মকর্তা মঈমুল ইসলাম, ব্যাংক কর্মকর্তা জুম্মা খান, এস এন্ড এস এজিন্সির মালিক বিভূতি ভূষণ বালা, মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ আসাদুজ্জামান মিন্টু, মেসার্স সাদত এন্টারপ্রইজের মালিক আমিনুল ইসলাম, মেসার্স হেরা এন্টারপ্রাইজের মালিক আসমত আরা জামান।
এ মামলায় ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব ও তার স্ত্রী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। বাকি আসামিরা পলাতক ছিল। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৮ এ বদলী হয়। গত ২৯ জুন এ মামলার ধার্য দিনে জামিন নিয়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব ও তার স্ত্রী তনিয়া রহমানসহ অন্যান্য পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও আগামী ৩১ জুলাই চার্জ গঠনের দিন ধার্য্য করে আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক। ৩১ জুলাই এ মামলার আসামি পক্ষ চার্জ শুনানি সময়ের আবেদন করেন। বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ১৭ আগস্ট চার্জ শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন। একই সাথে এদিন দুই আসামি হাজির হয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
এ মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামির মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। গত ২৯ জুলাই যশোরের বাঘারপাড়া থানা পুলিশ নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলার পাঁচটি ওয়ান্টেমুলে তাকে আটক করেন। পরদিন টিএস আইয়ুবকে আদালতে সোপর্দ করা হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
এ পাঁচ মামলার মধ্যে তিনি ৩টি মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফুরকান ওয়াহিদ।

রাতদিন সংবাদ

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

jashore-fish

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত