কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার ফিরোজ আহমেদ কাজল (২৮) নামের এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহষ্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আতিরিক্ত আদালত- ১ এর বিচারক তাজুৃল ইসলাম আদালতে পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মিরপুর উপজেলার কলিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মাসুদ (পলাতক), ছের আলীর ছেলে সিদ্দিক, বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে মাসুম মোল্লা (পলাতক), গাংনী উপজেলার হারাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আজগর আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন ও মৃত: শের আলী মোল্লার ছেলে মেসকাত আলী মোল্লা, দৌলতপুর উপজেলার সালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহম্মাদ বিশ্বাসের ছেলে সোহেল রানা ও কামাল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম রেজা (পলাতক) এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চৌড়হাস এলাকার বাসিন্দা মৃত লালন সেখের ছেলে জাকির হোসেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলা থেকে তিন আসামিকে খালাস দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১২ জুলাই বিকালে মিরপুর উপজেলা বরিয়া গ্রামের দেলবার হোসেনের ছেলে ফিরোজ আহমেদ কাজল (২৮) মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ি হতে ভেড়ামারা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। এরপর দুইদিন ধরে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে কল করে পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু পরবর্তীতে ফিরোজ আহমেদ কাজলের কোনো সন্ধান না পাইয়া ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট নিখোঁজ কাজলের পিতা বাদী হয়ে মিরপুর থানায় মুক্তিপণ দাবি করা বিভিন্ন কয়েকটি মোবাইল নম্বর উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ বা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মামলা করেন। নিখোঁজের তিন মাস পর আসামিদের স্বীকারোক্তিতে ফিরোজ আহমেদ কাজলের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৪ আগষ্ট অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ এনে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন মিরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলীম।
আদালতের পিপি এড্যাভোকেট অনুপ কুমার নন্দী বলেন, অনেক দেরিতে হলেও মিরপুর থানার কাজল নামের যুবককে অপহরণ ও মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আট আসামমির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সাজাসহ জরিমানা আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। ধার্যকৃত জরিমানার অর্থ পরিশোধ ব্যর্থ হলে প্রত্যেকে অতিরিক্ত আরো এক বছর করে সাজা ভোগ করতে হবে। তবে এই মামলার যেসব আসামিদের সাজা দেয়া হয়েছে তাদের সবগুলোর বিরুদ্ধে গত ২১ মার্চ বিজ্ঞ আদালত দৌলতপুর থানার চাঞ্চল্যকর জাহাঙ্গীর হোসেন মকুল হত্যা মামলায় বিভিন্ন দণ্ডের আদেশ দিয়েছেন একই আদালত।
বৃহষ্পতিবার ও গত সোমবারের রায়ের সময় যারা পলাতক ছিলেন সেসব আসামিরা আজও রায় ঘোষণার সময় পলাতক ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে এদের কেউ কেউ হয়তো পুলিশ বা র্যাবের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে মৃত্যুবরণ করে থাকতে পারেন।
অনলাইন ডেস্ক