বিশেষ প্রতিনিধিঃ মাত্র এক সপ্তাহেই যশোরের খোলাডাঙ্গার জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজল হত্যাকান্ড তদন্তে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে। র্যাব, ডিবি ও থানা পুলিশ পৃথক কয়েকটি অভিযানে হত্যা মিশনের ৪ সদস্যসহ একেএকে ঘটনায় জড়িত ৭ অপরাধীকে আটক করেছে। এছাড়া পলাতক খোড়া কামরুল ও মুন্নাকে খোঁজা হচেছ। হত্যায় ব্যবহৃত দেশিয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। সর্বশেষ ১১ নভেম্বর গভীর রাতে যশোর শহরতর সুজলপুর থেকে হত্যা মিশনের অপর সদস্য লাবিবকে আটক করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর অপারেশন দেবাশীষ জানিয়েছেন আটককৃতদের কয়েকজন হত্যার দ্বায় স্বীকার করেছে। দ্রুতই পলাতকদের আটক করে আইনে সোপর্দ করা হবে।
গত ৪ নভেম্বর রাতে যশোর খোলাডাঙ্গায় জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এঘটনায় থানায় মামলা হলে তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি ও র্যাব ৬ যশোরের সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে। হত্যাকারীদের ব্যাপারে প্রথমিক তথ্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামী যশোরের নেতৃবৃন্দ জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও আটকের দাবিতে মিছিল মানববন্ধনসহ কর্মসূচি পালন করেন। এরপর এই ৩ সংস্থায় জোরালোভাবে আটক অভিযানে মাঠে নামে। জেলা ডিবির পক্ষে ঘটনা তদন্তে এসআই মফিজুল ইসলাম, পৃথক অভিযান শুরু করেন। ৬ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর হত্যা মিশন ২ জন ও ঘটনায় জড়িত আরো ৩ জনকে আটক করা হয়। এরা হচ্ছে খুলনা তেরখাদার বারাশাত গ্রামের আছাবুর রহমান হাসিবের ছেলে ও খোলাডাঙ্গা সরকারি ক্লিনিকের সামনে আবুল বাশার বাবুর নাতি সাদমান রহমান সাকিন (১৯), খোলাডাঙ্গা মফিজ পাড়ার আমজাদ হোসেনে ছেলে আল আমিন হোসেন (১৮), লুৎফর রহমানের ছেলে রায়হান আহমেদ, খাড়কি সার্কিট হাউজ পাড়ার বাবলু মোড়লের ছেলে আব্দুর রহমান সাগর (২১) ও খোলাডাঙ্গা গাজীর বাজারের ইসমাইল হোসেনের ছেলে রিয়াদ হাসান (২১)।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মিশন সদস্য সাকিন ও আল আমিন ঘটনায় জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করে। এছাড়া হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগের একটি ভিডিও ফুটেজে পুলিশ পরিস্কার হয় মামলার এজাহারভূক্ত পলাতক আসামি লাবিব, সাকিনসহ ৪/৫ একটি মাদক সেবনের আসরে চাকু ও রিভলবার নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এই ভিডিওর সূত্র ধরে ও সাকিনের তথ্য অরপর একটি অভিযানে ভিডিওতে প্রাপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের ৩ সদস্য রায়হান, সাগর ও রিয়াদকে আটক করা হয়। আল আমিন ও সাকিন হত্যা দ্বায় স্বীকার করে পলাতকদের নাম ও অবস্থান বলে দেয়।
এরপর র্যাব ৬ যশোরের একটি টিম ৮ নভেম্বর বিকেলে মামলার অন্যতম প্রধান আসামি স্বরণকে বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে আটক করে। সে খোলাডাঙ্গার টোকনের ছেলে।
এরপর সর্বশেষ গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাতে যশোরের সুজলপুরে অভিযান চালিয়ে মামলার তদন কমকতা ইন্সপেক্টর দেবাশীষ পলাতক আসামি সাদমান রহমার লঅবিববে আটক করেছেন। সে খোলাডাঙ্গার আলম শেখের ছেলে।
তদন্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ জানিয়েছেন, ডিবির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আর আটক করা হয় লাবিবকে। আটকের পর তার দেখিয়ে দেয়াস্থান ওই গ্রামের তরিকুল ইসলামের বাড়ির পাশ থেকে দুটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। সে হত্যায় জড়িত বলে স্বীকারও করেছেন। র্যাব ডিবি এর আগে ৬ জনকে আটক করেছে। পলাতক খোড়া কামরুল মুন্নাকে আটকের চেষ্টা অভ্রাহত রয়েছে।
এদিকে জেলা ডিবির এসআ্ মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ে সজল হত্যাকান্ড তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে। আটকৃতদের মধ্যে আল আমিন ও সাকিন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১৩/১৪ জনের নাম প্রকাশ করে ঘটনার বর্ননাও দিয়েছে। পূর্ব শত্রুতা ও আক্রোশে আসামি স্মরণ, লাবিব ও রবিন জামায়াত নেতা সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আরো ১০, ১২ জনের সহযোগিতায় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নামাজে যাওয়ার পথিমধ্যে সজলকে ধরে এলোপাতাড়িভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে ২১টি আঘাত করে হত্যা করে।
রাতদিন সংবাদ