বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি: বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরায় হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি ও ব্যঙ্গচিত্র ফেসবুকে ছড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১১নভেম্বর-২৪) স্থানীয় তৌহিদী জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে শ’ শ’ ধর্মপ্রাণ মসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।
এদিন বিকেল মির্জাপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদের যশোর জেলা সহসভাপতি মাও. নাজমুল হুদা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খাজুরা সাংগঠনিক থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বাঘারপাড়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাও. আব্দুর রশিদ, খাজুরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মাওলানা মনিরুল ইসলাম, খাজুরা ইসলামিয়া ফাজিল (স্মাতক) মাদরাসার অধ্যক্ষ এখলাছ উদ্দিন, দর্গাহপুর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফিরোজুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খাজুরা সাংগঠনিক থানা শাখার সভাপতি মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, বন্দবিলা ইউনিয়নের সভাপতি হাফেজ মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম-মানবতার ধর্ম। অন্য ধর্মের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ ও কটূক্তি সমর্থন করে না। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি ও ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। কারণ মুসলিমরা তাদের নবীজিকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। অবিলম্বে হিন্দু ধর্মের ওই ছেলেকে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন হবে বলে পুলিশকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
সমাবেশ শেষে কলেজ মাঠ থেকে একটি মিছিল বারীনগর ভাটারআমতলা বাজার প্রদক্ষিণ করে। এ সময় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে প্রকম্পিত হতে থাকে চারিদিক। পুলিশ ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে সন্ধ্যায় শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচি শেষ হয়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, রোববার বিকেলে উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের সাদীপুর গ্রামের বিধান বিশ্বাসের ছেলে বাধন বিশ্বাস (১৯) তার ফেসবুক আইডি থেকে মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি ও ব্যঙ্গচিত্র করে একটি পোস্টে কমেন্ট করেন। এদিন বিকেলে সেই কমেন্টের স্ক্রিনশর্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় ছাত্র-জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়ে রাতে বাধনের বাড়ি ঘেরাও করে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গিয়ে পলাতক ওই তরুণের বিচারের আশ্বাস দেন। এ সময় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা বাধনকে আটক করতে পুলিশকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে তার বাড়ি ছাড়েন। এ ঘটনায় রাতেই ওই কটূক্তিকারীর বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আব্দুর রহমান নামে এক যুবক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, অভিযুক্ত পলাতক থানায় এখনো আটক করা যায়নি। রোববার রাতভর অভিযান চলেছে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। এ বিষয়ে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ জানান ওসি।
সোমবার সকাল নয়টায় সাদীপুরের ইউপি সদস্য সুকেশ পোদ্দার মুঠোফোনে বলেন, অভিযুক্ত বাধন পলাতক রয়েছে। আমি তাকে ভালোভাবে চিনি না। বাড়িতেও খুব একটা থাকে না সে। তার বাবা সাদীপুরের ঘরজামাই। এখানকার ভোটারও হননি। এ ঘটনায় ওই ছেলের কঠোর শাস্তির দাবিতে একাট্টা হয়েছে হিন্দু অধ্যুষিত সাদীপুর গ্রামের লোকজনও। রাতে দফায় দফায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, গোয়েন্দাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসেছিলেন। ওই ছেলেকে খুঁজে বের করতে আমরা গোটা গ্রামবাসীও সহযোগিতা করছি।
আর কে ০১