যশোর অফিসঃ যশোরের শংকরপুরে জনআক্রশের শিকার হয়েছে দুই স্কুল শিক্ষকের বাড়ি। ওই স্কুল শিক্ষকের শ্বশুর হাবিবুর রহমান দুই শিশুর যৌন নিপীড়নের শিকারের অভিযোগে আটক হওয়ার পর ওই শিশুর পরিবারের লোকজন হাবিবুর রহমানের দুই জামায়ের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আর হুমকি ধামকিও দিয়ে যাচ্ছে।
এই ব্যাপারে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ কার্যত কোন ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
শহরের শংকরপুর বটতলা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা যশোর শিক্ষবোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুই শিশুর যৌন হয়রাণীর অভিযোগ তোলেন চাঁচড়া ডালমালি এলাকায় বাসবাসকারী এক গৃহপরিচারিকা। ওই গৃহপরিচারিকা একটা সময় হাবিবুরের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এবং ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করতেন।
গত শনিবার দুুপুরে ওই গৃহপরিচারিকার মেয়ে এবং তার বান্ধবী রাস্তার পাশে বৃষ্টিতে ভিজে খেলা করছিলো। সে সময় হাবিবুর তাদের আইসক্রীম খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এবং যৌনহয়রাণী করে। এই বিষয়টি নিয়ে পরে এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে পুলিশে সংবাদ দিলে পুলিশ তাকে আটক করে এবং তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
হাবিবুর রহমানের মেয়ে আসমা খাতুন জানিয়েছেন, বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিত। তাদেরই এক আত্মীয় পূর্ব শত্রুতার জেরে হইচৈ বাঁধিয়ে লোকজন জড়ো করে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে তার বাবার বিরুদ্ধে।
যে মেয়ে দুইটোর যৌন হয়রাণীর কথা বলা হচ্ছে সে মেয়ে দুইটি তাদের বাড়িতেই ঢুুকেনি। রাস্তার পাশের দোকানের সামনে তার বাবার সাথে দেখা হয়েছিল। সে সময় তার বাবার সাথে তার মাও ছিলেন। মেয়ে দুটোকে বৃষ্টিতে ভিজতে নিশেধ করার পর তারা চলে যায়। তাহলে বাড়ির মধ্যে ঢুকলো কখন। পরে হট্টোগোল হলে পুলিশ আসে এবং তার পিতাকে ধরে নিয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী মিজানুর রহমান মনিরামপুর উপজেলার কদমবাড়িয়া হাই স্কুলের শিক্ষক। তিনি জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় সেদিন বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার পরপরই ওই দুই মেয়ের আত্মীয় স্বজনরা তার বাড়িতে গিয়ে জালানার গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। ইটের টুকরো জানালা ভেদ করে তার দুই বছরের শিশুর মাথায় লাগে। সবগুলো জানালায় ইট নিক্ষেপ করা হয়। পরে ঘরের মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পাশেই আছে তার ভগ্নিপতি কবিরুল ইসলামের বাড়ি। তিনি যশোর কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষক। তার বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। লাথি মেলে দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করা হয়েছে। জানালার গ্লাসে ইট নিক্ষেপ করে ভাংচুর করা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, চাঁচড়া ডালমিল এলাকার টিটোর বাড়ির ভাড়াটিয়া আসলাম (৪৫) ও তার পালক ছেলে শাহজাহান (২৫), শংকরপুর ইসহাক সড়কের মঞ্জুর বাড়ির ভাড়াটিয়া শামীম হোসেন (৩৩)সহ ৪/৫জন তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তিনি তাদের বলেন, যিনি অপরাধ করেছেন তাকে আটক করতে বা তার বাড়িতে হামলা না চালিয়ে তাদের বাড়িতে কেন হামলা চালানো হচ্ছে। সেসময় তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
শিক্ষক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি বা তার স্ত্রী অথবা তার ভাইরাভাই কোন অপরাধ করেনি। কিন্তু তার বাড়িতে হামলা চালানো হলো। এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তা মামলা নেয়নি। তারা এখনো হুমকির মধ্যে রয়েছেন।
এই বিষয়ে কোতয়ালি থানায় ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় আসামিকে আটক করা হয়েছে মামলাও করা হয়েছে। কিন্তু তার বাড়ি বা তার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে হামলা হওয়া দুঃখ জনক।
লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ সেখানে যায়নি কেন এই প্রশ্নে জবাবে ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, গদ দুইদিন অফিসিয়াল কাজে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। লিখিত অভিযোগ হাতে পায়নি। তবে বিষয়টি দেখা হবে।
আর আই-২০