ওয়াসী মোহাম্মদ সাদিক: যুক্তরাজ্যের ইতিহাসবিদ নোয়াহ হারারির মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অর্থনীতির সংকট তৈরি করতে পারে। তিনি মনে করেন, এআই মানুষের কাজের অনেকটাই স্বয়ংক্রিয় করে তুলবে, যার ফলে ব্যাপক বেকারত্ব সৃষ্টি হবে। এছাড়াও, এআই নতুন ধরনের ব্যবসা ও শিল্পের সৃষ্টি করবে, যার ফলে অর্থনৈতিক অসাম্য বেড়ে যাবে।
হারারির এই আশঙ্কা সম্পূর্ণ অমূলক নয়। ইতিমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেসব ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করা হচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা কমে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যাংকিং, বীমা, খুচরা বিক্রয়, এবং পর্যটন খাতে এআই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে এই খাতে কর্মরত অনেক মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
তবে, হারারির আশঙ্কার পাশাপাশি এআই অর্থনীতির জন্য সুযোগও তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এআই নতুন ধরনের পণ্য ও সেবা তৈরি করতে পারে, যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, এআই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে, যার ফলে মূল্য হ্রাস পাবে এবং ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
অবশ্যই, এআই অর্থনীতির উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে এআই প্রযুক্তির বিকাশ এবং ব্যবহারের উপর। যদি এআই প্রযুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য ব্যবহার করা হয়, তাহলে এটি অর্থনীতির জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে। তবে, যদি এআই প্রযুক্তি মানুষের চাহিদার বাইরে ব্যবহার করা হয়, তাহলে এটি অর্থনীতির জন্য সংকট তৈরি করতে পারে।
আমার মতে, এআই অর্থনীতির জন্য সুযোগ ও সংকট উভয়ই নিয়ে আসতে পারে। এটি নির্ভর করবে আমাদের উপর, আমরা কীভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করি। যদি আমরা এআই প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করি, তাহলে এটি অর্থনীতির জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। তবে, যদি আমরা এআই প্রযুক্তিকে মানুষের ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করি, তাহলে এটি অর্থনীতির জন্য একটি হুমকি হতে পারে।
এআই প্রযুক্তির বিকাশ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, এআই প্রযুক্তি মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এজন্য আমাদের এআই প্রযুক্তির নীতি ও নৈতিকতা সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে এবং এআই প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।