যশোরে পুলিশ কনস্টেবল পদে লিখিত পরীক্ষার সময় প্রক্সি দিতে যেয়ে তিন ভুয়া শিক্ষার্থী আটকের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এরআগে বুধবার সকালে যশোর ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে ওই পরীক্ষা হয়। সেখানথেকে তিনজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গরজোরিপা গ্রামের ছাবর আলীর ছেলে শামিউল হক জামালপুরের সরিষাবাড়িয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে সিপন হোসেন রাসেল ও নেত্রকোনার সদর উপজেলার দূর্গাপু গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে সরোয়ার হোসেন। এ তিনজনের মধ্যে সিপন হোসেন মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান ছাত্র ও সরোয়ার একই কলেজের সাবেক ছাত্র।
এ মামলার পলাতক তিন আসামি মণিরামপুর উপজেলার হোগলাডাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আবু রায়হান, কেশবপুর উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে আলিমুন ও মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে রাকিবুল হাসানের পরিবর্তে আটক তিন আসামি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রক্সি দিতে এসেছিলেন।
এ মামলায় আরও দুই আসামি রয়েছেন যারা আটক তিন আসামির সহযোগি। তারা হলেন, শেরপুর সদর উপজেলার চর শাহাব্দি গ্রামের নাজমুলের ছেলে এসএম অপু হোসেন ও জামালপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা আবু সাইদ। এরবাইরেও অজ্ঞাত আরও ৪/৫জনকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, পুলিশ প্রথম শামিউল হককে আটক করে। পরে তিনি জানান, পরীক্ষার্থী আবু রায়হানের প্রবেশপত্র নিয়ে তিনি প্রবেশ করেছেন। তিনি জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র যারা এসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সে জানায় পলাতক আসামি আবু সাইদের মাধ্যমে তিনি এসেছেন ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে। পরে পুলিশ জানতে পারে আলী রেজা রাজু ভবনের চারতলায় ৪০৩ নাম্বার রুমে আরও একজন প্রক্সি দিচ্ছেন। পরে তারা রাসেলকে আটক করে। তিনি আলিমুনের পরিবর্তে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে একই ভবনের ২১১ নাম্বার রুম থেকে সরোয়ারকে আটক করে। সে রাকিবুলের পরীবর্তে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তাদের প্রবেশপত্র ও ভাতা জব্দ করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। এসময় তারা জানায়, তাদের একটি চক্র রয়েছে যারা সারা দেশে এধরণের কর্মকান্ডে লিপ্ত। টাঙ্গাইল জেলা থেকে একটি প্রাইভেট গাড়ী ভাড়া করে যশোরে এসেছেন পরীক্ষা দিতে। এছাড়া জনপ্রতি তারা পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৮০ হাজার টাকা করে নেন। তাদেরকে নামিয়ে প্রাইভেটকারটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাশে রয়েছে বলেও জানায়। এবং ওই প্রাইভেটকারে তাদের মোবাইল ফোন রাখা রয়েছে। পরে পুলিশ ওই প্রাইভেটকারের সন্ধানে যেয়ে সত্যতা পায়। পুলিশ ওই প্রাইভেট কারথেকে দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই আবু হাসান বলেন, আটক আসামিরা একটি চক্র। যারা সারা দেশেই এ ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। তারা আসল প্রবেশপত্রের উপরে থাকা পরীক্ষার্থীর ছবি পরিবর্তন করে নিজেদের ছবি বসিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে প্রক্সি দেয়। বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে পুলিশ জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৪