Thursday, June 27, 2024

অভয়নগরে থানা হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

- Advertisement -

বিশেষ প্রতিনিধি– যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে আফরোজা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জাহিদুল ইসলাম সোহাগ। সোমবার দুপুরে এক সাক্ষাতকারে এ কথা জানান। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) নূর ই আলম সিদ্দীকিকে প্রধানকরে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেল মো: জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর রুখসানা খাতুন। আফরোজা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে মামলা নং ৩২ তারিখ ২/৬/২৪। তার নামে মাদক আইনে অপর একটি মামলা হয়েছে। মৃত আফরোজা বেগম এর ছেলে মোঃ আরিফ হোসেন মুন্না জানান, পুলিশ তার মায়ের চিকিৎসা সহ সকল ডকুমেন্টস আটকে দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে প্রেসক্রিপশন ছিল তা আটকে রেখেছেন। ওসি সাহেবের কাছে ওই প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে চাইলে তিনি ছবি তুলতে দেননি। এখনো পর্যন্ত যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে কোন কাগজপত্র আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করি। কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে স্থানীয় মডেল কলেজের পিছনে একটা বাড়ি তৈরি করছি। আমাদের একটা ইজিবাইক ছিল। সেটা বিক্রি করে ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ও গ্রামীন ব্যাংক থেকে মামির নামে লোন করা ৫০ হাজার টাকা ঘরে ছিল । ঘটনার দিন পুলিশ সব টাকা নিয়ে গেছে। পুলিশ আমার মাকে ৩০ পিস ইয়াবা দিয়ে মিথা মামালা দিয়েছে। আমার মা একজন ভালো মানুষ ছিল। তিনি আদৌ কোনদিন এই মাদকের সাথে জড়িত ছিলেন না। তাকে এএসআই সিলন চুলের মুঠি ধরে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে মারপিট করেছে। এবং অনেক সময় ধরে নির্যাতন করতে থাকে। এছাড়া ওই দিন রাত সাড়ে তিনটার সময় রেল স্টেশনে এসে দারোগা শামছুর ১০ হাজার টাকা চায়। টাকা না দিলে মা কে ২০০ পিস ইয়াবা দিয়ে কোর্টে চালান দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়। ভয়ে আমি দারোগা শামছুর এর হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিলাম। মুন্না আরো জানায় দারোগা সিলন ও শামছুর শনিবার রাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসে। পরে নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা দিয়ে তাঁর মাকে গ্রেপ্তার দেখায়। এ সময় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজন পুলিশ মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করতে থাকে । পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। সকালে থানায় গিয়ে দেখি আমার মা খুব অসুস্থ্য। পুলিশকে অনুরোধ করে আমার মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে ফের থানায় নিয়ে যায়। আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাজারহাট নামক স্থানে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। আফরোজা বেগমের ছোট ছেলে নওয়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির মোল্যা বলেন, শনিবার রাতে আমার আম্মু বাড়ির পাশে ডিপ টিউবয়েল থেকে পানি আনতে যায়। এ সময় আমাদের বাড়িতে পাঁচজন পুলিশ আসে। এরপর আমার মা বাড়িতে আসলে এর মধ্যে সিলন দারোগা (এএসআই সিলন আলী) আম্মুকে বলে কাছে যা আছে, বের করে দিতে বলে । তাঁর কাছে কিছু নেই জানালে তিনি (সিলন আলী) একজন নারী পুলিশকে ফোন করে ডেকে আনেন। তিনি আম্মুর শরীর তল্লাশি করেও কিছু পাননি। এরপর সিলন দারোগা আম্মুকে চড় মারতে থাকেন। আম্মুকে মারতে নিষেধ করলে তিনি (সিলন দারোগা) আমাকেও দুটি চড় মারেন। এরপর আমাকে ঘর থেকে বের করে নারী পুলিশের সহায়তায় ঘরে দরজা দিয়ে কী করেছে, জানি না। তবে আমার সামনে চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে আম্মুকে ঝুলিয়ে মারেতে থাকে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, হাসপাতালের যে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া তাতে উল্লেখ্য করা হয়েছে ওই নারী হৃদরোগে আক্রন্ত হয়ে মারা গেছেন।

রাতদিন ডেস্ক-জয়-

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত