নড়াইল প্রতিনিধি-নড়াইল জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডবাসীর আয়োজনে শহরের একটি কমিউিনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সদস্য ও ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: জুয়েল জমাদ্দার।এ সময় পৌর শ্রমিকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: গোলাম সর্দার, তরিকুল জমাদ্দার, রেজওয়ানুল ইসলাম,আবির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠকালে জুয়েল জমাদ্দার বলেন, হাসিনার পতন হয়ে দেশ স্বাধীন হলেও তার প্রেত আত্মা এবং দোসররা এখনো দেশের প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান। এরা দলের নাম ভাংগিয়ে মামলা বানিজ্য, দোকান পাট, জমি দখল ও খুব গোপনে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন- আমরা নড়াইল পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ভওয়াখালী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। আমাদের জমাদ্দার বংশের প্রায় ১০০ ভাগই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। আমরা সক্রিয়ভাবে বি,এন,পি পোষ্টধারী এবং ব্যাবসায়ী, সমাজ সেবক ও চাকুরীজিবী। আমরা প্রায় সকলে বি, এন, পি করি। গত ইং ০৯/০৯/২০২৪ তারিখে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা বুজু হয় (মামলা নং-৩৬২৪/৯৯২৪)। এই মামলাটি সম্পূর্ন মিথ্যা, ষড়যন্ত্র এবং হয়রানিমূলক। এই মামলার আসামীদের মধ্যে প্রায় সকলেই বি,এন,পি করে এবং বিগত আওয়ামী সরকার আমলে ষড়যন্ত্রের শিকার। উক্ত মমলাটি যে সকল কুশিলবের ইন্ধনে থানায় মামলা রুজু হয়েছে সে সকল কুশিলবের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক চরিত্র সম্পর্কে কিছু তথ্য উপস্থাপন করছি। মূলত ভওয়াখালী গ্রামের নিবাসী মোঃ ফরিদ বিশ্বাস ৩ সন্তানের জনক এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং ফরিদ বিশ্বাসের বিশ্বাস গোষ্ঠী ৯৯% আওয়ামীলীগ করে। এবং আরও তার সাথে জড়িত আছে বর্তমান জেলা বি,এন,পির সাংগঠনিক সম্পাদক খুব গোপন ও ঠান্ডা মাথার চাঁদাবাজ শাহারিয়ার রিজভী জর্জ ও সাবেক জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দীর্ঘদিন জাসদ ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ও বর্তমান জেলা বি,এন,পির সিনিয়র সহ সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল। এই জুলফিকার আলী মন্ডল বিগত বি,এন,পি সরকারের আমলে বি,এন,পির নাম ভাংগিয়ে নড়াইল জেলা বাস মালিক সমিতির দীর্ঘদিন সাধারন সম্পাদক ছিলেন। এখান থেকে তিনি ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা দূর্নিতী ও আত্মসাৎ করে এবং জেলা বি,এন,পি ও নগর বি,এন,পির নেত্রীবৃন্দ তাকে পৌর মেয়র বানান এবং মেয়র হওয়ার পরে সে আত্মীয়করন ও শেখ মুজিবের ১৫ই আগষ্টে ২৭ মন জিলাপি প্রদান করে ও আওয়ামীলীগের সাথে যোগ সাজসে বি,এন,পির নেতাকর্মীকে অবমুল্ল্যায়ন করে। গত ৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে জেলা বি,এন,পির ইফতার পার্টিতে জেলা বি,এন,পির সাধারন সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ আলী হাসান সহ জেলার শত শত গুরুত্বপূর্ন নেত্রীবৃন্দের সামনে মাইকে ঘোষনা দেন আমি জুলফিকার আলী মন্ডল আজ থেকে বি,এন,পির সকল প্রকারের কর্মকান্ড ও দল থেকে স্বেচ্ছায় দল ত্যাগ করলাম। এই কথা বলার পরের দিন নড়াইল-২ আসনের এম,পি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা ও তার পিতা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন এর সাথে মিটিং করে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং তাদের সাথে কথা হয় তাকে পৌর মেয়র বানিয়ে আওয়ামীলীগের দলীয় পোষ্টে নিয়ে নেবেন। তারই ধারাবাহিকতায় এমপি মাশরাফির নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনিত প্রার্থী আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা আজিজ রহমান ভুইয়ার পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। ৫ আগষ্ট ২০২৪ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এমপি মাশরাফির বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন জুলফিকার আলী মন্ডলের বাড়িতে প্রায় এক সপ্তাহ আত্মগোপন করে থাকেন এবং মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা ও গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন এর সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন বলে তাদের নিকট হতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। মূলতঃ জুলফিকার আলী মন্ডল বি,এন,পি-তে যোগদান করার আগে ৩-৪ টি দল পালটানো লোক এবং তিনি একজন ভয়ঙ্কর সুবিধাবাদী রাজনীতিবীদ। তার বউ নড়াইল সদর হাসপাতালের হিসাব রক্ষক পদে চাকুরিরত থেকে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৭৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। বর্তমানে তিনি চাকুরীচ্যুত এবং দুর্নীতি দমন মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী। জুলফিকার আলী মন্ডলের এই ঘটনাগুলো নড়াইলের সর্বস্তরের লোক অবগত। জর্জ ও জুলফিকার আলী মন্ডল এই দুই জনের ছত্র ছায়ার ফরিদ বিশ্বাস ৫ আগষ্ট ২০২৪ এর পর নড়াইল সদর হাসপাতালের সামনে নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার দখল, পাসপোর্ট অফিসের সামনে দোকান দখল, মামলা বানিজ্য এবং নড়াইল রূপগঞ্জ বাজারে দুই ব্যাবসায়ীর যথাক্রমে এক জনের নিকট থেকে দেড় লক্ষ ও অপর জনের নিকট থেক ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে। ফরিদ বিশ্বাস জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের ছোট ভাই মিলন খানের দামী রেঞ্জ রোভার জিপ ছিনিয়ে নেয়, পরবর্তিতে ছয় লক্ষ টাকার বিনিময়ে জিপটি তার নীজ বাড়িতে যেয়ে ফেরত দেয় মর্মে ফেস বুকে নিউজ প্রকাশিত হয়।
এমতাবস্থায়, এই তিন নেতাকে আমরা ৫নং ওয়ার্ডের সাধারন মানুষ প্রত্যাখান ও অবাঞ্চিত ঘোষনা করছি। পাশাপাশি দেশের ভবিষ্যৎ জনগনের যোগ্য উত্তর সুরী তারুন্যের অহংকার বি,এন,পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা জনাব তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ বিশ্বাস জানান, আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষরা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।জুলফিকার আলী মন্ডল এবং শাহরিয়ার রিজভী জর্জও তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট বলে দাবি করেন।