এবার চট্টগ্রামে এক যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গান গেয়ে পিটিয়ে মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিশ সেকেন্ডের এ ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে উড়ালসড়কের নিচে দুটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় গান গেয়ে তাকে মারধর করছেন কয়েকজন তরুণ।
ঘটনাটি গত ১৪ আগস্টের হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে যুবককে মারধর করা হয়, ওই যুবকের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের ২নং নদনা ইউনিয়নের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে। তিনি নগরের ফলমণ্ডির একটি দোকানে চাকরি করতেন।
তবে যে স্থানে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল সেটি চট্টগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান উড়াল সড়কের নিচে ২নং গেট মোড় এলাকায়। গত ১৪ আগস্ট রাতে নগরে প্রবর্তক এলাকা থেকে পুলিশ শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন শাহাদাতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। কিন্তু কেন এ হত্যাকাণ্ড কিংবা কার সঙ্গে বিরোধ, তা এজাহারে উল্লেখ নেই।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ আগস্ট রাতে প্রবর্তক এলাকা থেকে ক্ষতবিক্ষত ও অচেতন অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার চাচা ফেসবুকে লাশের ছবি দেখে থানায় এসে মামলা করেন। তবে মারধরের শিকার ব্যক্তি যে শাহাদাত, সেটি জানা গেছে তার স্ত্রীর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শনাক্ত করার পর।
মামলার এজাহারে নিহত শাহাদাতের চাচা মো. হারুন উল্লেখ করেন, ১৩ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবেন বলে তার স্ত্রীকে জানান শাহাদাত। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেন স্ত্রী শারমিন। সে সময় শাহাদাতের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গেল ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকে বাদী দেখতে পান, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহর মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজা শাহাদাত হোসেনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী শারমিন আক্তার ও বাদী।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী মারধরের শিকার ব্যক্তি শাহাদাত বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে যারা মারধর করছেন, তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
অনলাইন ডেস্ক