যশোর প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরে দেশের মানুষের মধ্যে শোষনহীন সমৃদ্ধ একটি দেশ প্রাপ্তির আকাঙ্খা জন্মেছে। তাই ইসলামী সৎ যোগ্য দক্ষ ও দেশ প্রেমিক নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। আজ সাড়ে ১৫বছরের গড়ে ওঠা জালিম স্বৈরশাসক ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গেছে। ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন সেই সাড়ে সাতশত পরিবারের মাঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম গ্রহণ করেছে। আন্দোলনে আহত-নিহত ও বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর কারণে আজ জাতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন,আগামীতে যদি আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখি তাহলে আমাদেরকে মদিনাতুল মনোয়ারার ঐ সময়ের মেধা, যোগ্যতা এবং পরিশ্রম আমাদের সামনে আনতে হবে। তাহলেই একটি সুখী বাংলাদেশ পড়া সম্ভব হবে
তিনি বলেন,ন্যায় ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েম ব্যতিত দুনিয়ায় প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। রুকনদের আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে হবে। নিজেকে পরিবার ও সমাজের মাঝে উত্তম মানুষ হিসাবে উপস্থাপন করতে হবে। মন্দের জবাব ভালো দিয়ে দিতে হবে। প্রতিনিয়ত কুরআন হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য হক আদায় করে পড়তে হবে। রুকনদের দানের হাতকে প্রসারিত করতে হবে। এছাড়া সকল মানুষের কল্যাণে আপনাদেরকে কাজ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নসহ প্রতিবেশী ও সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করতে হবে। কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা পালন করতে হবে। বেশি বেশি করে সামাজিক কাজ কর্মের মাধ্যমে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। রুকনদের আত্মগঠনে সচেষ্ট হয়ে পরিবারের কাছে উত্তম আর্দশ হতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রুকনদের সংগঠন সম্প্রসারণ-মজবুতি অর্জন, ইউনিট বৃদ্ধি, কর্মী বৃদ্ধিসহ যশোরে জামায়াতে ইসলামীকে গণ মানুষের সংগঠনে পরিণত করার আহবান জানান তিনি ।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) যশোরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৯টায় রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা কর্তৃক আয়োজিত রুকন সম্মেলন ২০২৪-এ কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও যশোর শহর সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল এর সভাপতিত্বে এবং যরশার শহর সাংগঠনি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস এর সঞ্চালনায়
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও সহকারী পরিচালক যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চল মাওলানা আজীজুর রহমান, টিম সদস্য যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চল ড. আলমগীর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নড়াইল জেলা আমীর এ্যাড: আতাউর রহমান বাচ্চু, মাগুরা জেলা আমীর অধ্যাপক এম এ বাকের, যশোর জেলা পশ্চিম আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর জেলা পূর্ব ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আজিজ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর, মাওলানা শিহাব উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তব্যরা বলেন, বর্তমান সমগ্র পৃথিবী জুড়ে অশান্তির মূলকারণ সততা ও পরকালের জবাবদিহিতার অভাব। পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রের সর্বস্তরে যে অবক্ষয় অনাচার, লুটপাট ও দুর্নীতির ব্যাধিতে আক্রান্ত তার প্রধানতম কারণ অসৎ নেতৃত্ব। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সততা দক্ষতা দেশপ্রেম ও পরকালের জবাবদিহিতা সম্পন্ন নেতৃত্ব উপহার দিয়ে সেইশূন্যতাকে পূরণ করবে ইনশাআল্লাহ।
বক্তারা আরো বলেন, আজকে জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার ভূলন্ঠিত হচ্ছে। দুর্নীতি ও দু:শাসনের যাতাকলে মানবতা আজ ভূলন্ঠিত। বাংলাদেশ জাময়াতে ইসলামীর প্রত্যেক কর্মীদেরকে নবীরাসূল(সা.) ও সাহাবীদের ত্যাগ কুরবানি স্মরণ করে সামনে চলতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস হল জুলুমনির্যাতন সহ্য করে দ্বীন কায়েমের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। ইতিহাস স্বাক্ষী যতদিন দুনিয়ার বুকে ইসলামের বিধান কায়েম ছিল ততদিন প্রতিটি নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্টিত ছিল। আজকের বাস্তবতায় ভেদাভেদের দেয়াল ভেঙ্গে সবার জন্য কল্যাণকর একটিসমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব একমাত্র ইসলামের সার্বজনীন আদর্শকে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন একটি অনুপম সুন্দর সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে।
আর কে-০২