যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) কৃষিযন্ত্র উদ্ভাবনী প্রতিভা অন্বেষণ শীর্ষক সেমিনার ও বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এই সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
“কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর লাভজনক করা(এফএমডি)” প্রকল্পের অর্থায়নে সেমিনারের আয়োজন করে বারির ফার্ম মেশিনারি এন্ড পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোর এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহাম্মদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল মতিন হাওলাদার।
বিশেষ অতিথি উপস্থিত হিসেবে ছিলেন, ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ মো. রশিদুল আমীন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারির এফএমপিই বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড.মো.নূরুল আমিন।
সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন রোকনুজ্জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা,আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোর এবং সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন গাজীপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা,এফএমপিই বিভাগ,(বারি) শাম্মী আক্তার।
মূল প্রবন্ধে ড. মো. নূরুল আমিন বলেন, কৃষিতে শ্রমিকের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি বর্তমান উৎপাদনের একটি বড় অন্তরায়। যুবকরা কৃষি কাজের চেয়ে বিদেশ বা শিল্পখাতে ঝুঁকে পড়ছে। ফলে কৃষি শ্রমিকের সংকট তৈরি হচ্ছে। এ সংকট কাটাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণই হতে পারে কার্যকর সমাধান। দেশের বৃহত্তম গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারি, কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে, যার মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি অন্যতম। তাদের ফার্ম মেশিনারি ও পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ পর্যন্ত ৫৫টি কৃষিযন্ত্র উদ্ভাবন করেছে, যা মাঠ পর্যায়ে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল মতিন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও আমাদের কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এখনো কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসার মৌলিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ভবিষ্যতে কৃষিতে আবাদ বাড়বে, জীবাণুমুক্ত ফসল উৎপাদন হবে এবং কৃষকরা উপকৃত হবে। এর ফলে আমাদের দেশ আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। আমি আশা করি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট তাদের গবেষণা কেন্দ্রগুলো আমাদের ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করবে। এতে ছাত্রদের গবেষণার সুযোগ বাড়বে এবং আমাদের কৃষক ভাইয়েরাও উপকৃত হবেন, যা দেশের কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
যান্ত্রিকীকরণ ছাড়া চলমান কৃষির ভিত্তি অযৌক্তিক হয়ে পড়েছে। উন্নয়নের সাথে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ চলমান। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ তরুণ প্রজন্মকে কৃষির দিকে আকৃষ্ট করেছে। আজকের এই প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম উজ্জীবিত হয়ে দেশকে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাবে এই আশা ব্যক্ত করছি।