Wednesday, October 9, 2024

বিচারককে উড়ো চিঠি দেয়া সেই আইনজীবী নব কুমার কুন্ডু ফের আলোচনায়

- Advertisement -

যশোরে এক বিচারককে উড়ো চিঠি দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন বহিস্কৃত আইনজীবী নব কুমার কুন্ডু।

এবার শুধুই তিনিই নন, তার সাথে আলোচনায় উঠে এসেছে যশোরের আরও তিন আইনজীবী। অভিযোগ উঠেঠে ওই তিন আইনজীবী নব কুমার কুন্ডুকে জামিনের জন্য আট লাখ টাকা নিয়েছেন কিন্তু জামিন করাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

পরবর্তিতে আরেক মাধ্যমে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন ওই টাকা ফেরত চাইলে নানা ধরণের তালবাহানা করছেন। এ বিষয় নিয়ে নব কুমার ও তার ভাই বিভিন্ন মহলে ধন্যা ধরছেন। যা নিয়ে আদালত পাড়ায় চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।

নব কুমার কুন্ডুর ভাই উত্তম কুমার কুন্ডু সাংবাদিকদের জানান, ওই ঘটনায় তার ভাই অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডুসহ তিনজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে দ্রæত বিচার আইনে মামলা দিয়ে আদালতের সোপর্দ করেন। অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডুর পক্ষে আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয় সিনিয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম বাচ্চুকে। তাকে দুই লাখ টাকা দেন তিনি। তিনি দীর্ঘদিন চেষ্টা করে নব কুমারকে জামিন করাতে ব্যর্থ হন বাচ্চু। পরবর্তীতে মঞ্জুরুল আল মামুন দ্রæত জামিন করিয়ে দিতে পারবেন বলে আশস্ত করেন। এসময় মামলার কাগজ ফিরিয়ে নিতে আরও একলাখ টাকা দাবি করেন অ্যাডভোকেট বাচ্চু। শেষমেষ ৭২ হাজার টাকা দিয়ে নথি দেয়া হয় অ্যাডভোকেট মামুনের কাছে। তাকেও দেয়া হয় ৮৬ হাজার টাকা। কিন্তু তিনিও জামিন করাতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহিনের জুনিয়র হাদিউজ্জামন সোহাগের সাথে নব কুমারের জামিনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। নব কুমারকে জামিন করাতে শাহীন ও তার লোকজন ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি অনুযায়ী অ্যাডভোকেট শাহিনের চেম্বারে গিয়ে সোহাগের হাতে ওই পাঁচ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়। সে সময় আইনজীবী শাহিন চেম্বারে ছিলেনা। আইনজীবী সোহাগসহ কয়েকজন আইনবীবী একদিন নব কুমারের জামিনের জন্য আদালতে শুনানি করেছিলেন। এরমধ্যে শাহিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নব কুমারের জামিনের ব্যপারে আর কোন পদক্ষেপ নেননি হাদিউজ্জামান সোহাগসহ ওই সেরেস্তার অন্যরা।

এক পর্যায় তারা উচ্চ আদালতে যান। গত গত ১৪ জুলাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি।

এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট হাদিউজ্জামান সোহাগ জানিয়েছেন, তিনি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীনের সেরেস্তায় জুনিয়র আইনজীবী হিসেবে কাজ করতাম। নব কুমারকে জামিন করানোর কথাবর্তা হয়েছিল শাহানুর আলম শাহীনের সাথে। যে দিন নব কুমারের পরিবারের সদস্যরা টাকা দিতে এসে ছিলেন সেদিন সিনিয়ার চেম্বারে ছিলেন না। সিনিয়ারের সাথে কথা বলে তার নির্দেশনা অনুযায়ী টাকা গ্রহন করে ড্রয়ারে রেখে দিয়েছিলন তিনি। সিনিয়র হটাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় নব কুমারকে আর জামিন করানো হয়নি।

অপর দিকে অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল আলম মামুন জানিয়েছেন, তিনি নব কুমারের পরিবারের সাথে মামলা চালানো সাইনিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করেছেন। তাকে জামিন করার সুযোগ না দিয়ে পরিবার অন্য আইনবীবী দিয়ে কাজ করিয়েছেন। ফলে তাকে আমি আইনী সহায়তা দিতে পারিনি।

এ বিষয়ে অ্যডভোকেট মাহাবুব আলম বাচ্চু বলেন, তিনি ওই তিন আসামির মধ্যে একজনের জামিন করিয়েছেন। এছাড়া নবকুমার কুন্ডুর একাধিক আইনজীবী ছিলেন। তিনি বলেন, যে টাকা নিয়েছেন বলা হচ্ছে তা তিনি নেন নি। শুধুমাত্র শুনানিতে অংশ নেয়ার ফি নিয়েছেন। পরবর্তিতে তার কাছথেকে মামলার নথি নিয়ে যাওয়ায় আর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এদিকে সাধারণ আইনজীবীরা বলছেন, চলতি বছরের পহেলা ফেব্রæয়ারি যশোরের এক নারী বিচারককে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে নবকুমার কুন্ডু, তার মহুরি রবিউল ও কম্পিউটার অপারেটর মিহিরকে আটক করা হয়। এরপর থেকেই এ চক্রকে জামিনে বের করতে একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠে। নব কুমার কুন্ডুর অপরাধের জন্য যখন পুরো আইনজীবী সমাজ প্রশ্নের মুখে। তখন ওই চক্র সক্রিয় নব কুমারকে বের করতে। আইনজীবীদের কাছেই একজন আইনজীবী প্রতারণার স্বীকার হবেন তা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট বলেন, নব কুমার কুন্ডু কে সমিতি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে, তার ভাই যদি কোনো আইনজীবীর কাছথেকে প্রতারিত হয় তাহলে অব্যশই সমিতি পাশে থাকবে। তবে, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। কিন্তু লোকমুখে তিনি এসব কথা শুনেছেন বলে মন্তব্য করেন।

রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৯

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত