সদর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন কুখ্যাত টিএসআই রফিকুল ইসলাম রফিকের সেই ঘনিষ্ট সহযোগি বিরামপুরের গোবিন্দ রয়েছে বহাল তবিয়াতে। তার নানা মুখি অত্যাচার থেকে রেহায় পাচ্ছেন না তারই মৃত ভাইয়ের স্ত্রী আখি রানী বিশ্বাস। স্বামীর মৃত্যুর গোবিন্দর অত্যাচারে পালিয়ে বেরাচ্ছেন তিনি। স্বামীর কেনা জমিও দখল করে নিয়েছেন ওই গোবিন্দ। বাধ্য হয়ে আখি আদালতে মামলা করেন। যা কাল হয়ে দাড়িয়েছে সন্তানসহ তার পরিবারের । এর জেরে তাকে ও তার শিশু সন্তানদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন গোবিন্দ। সর্বশেষে গত ১৭ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় আখি রানি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বর্তমানে প্রাণভয়ে তিনশিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
নড়াইলের লোহাগড়ার উত্তম বিশ্বাসের মেয়ে আখি রানীর অভিযোগ, তার স্বামী যশোর সদরের বিরামপুর এলাকার অসীম বিশ্বাস কিউনী রোগে মারা যান। এরপর তাকেসহ তার ছেলে অর্থ বিশ্বাস (৯) ও দুই মেয়ে অথরা বিশ্বাস(৬) ও আকৃতি বিশ্বাস(৩) কে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন দেবর গোবিন্দ বিশ্বাস, শাশুড়ি আরতি রানী বিশ্বাস, ননদ শীলা রানী বিশ্বাস ও ননদায় প্রনয় বিশ্বাস। এমনকি অসিম বিশ্বাসের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে তাকে ও সন্তানদেরকে। বাধ্য হয়ে তিনি সন্তান অর্থ বিশ্বাসের নামে কেনা একটি জমিতে আশ্রয় নেন। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর সেখানেও হামলা চালায় গোবিন্দ চক্র। মারপিট করে গুরুতর জখম করে ও বাড়িতে থাকা সোনার গহনা ও নগদ একলাখ ৩০ হাজার টাকা লুট করে ওই বাড়ি দখলে নিয়ে নেয় তারা। এমনকি ছেলেমেয়ে সহ আখি রানীকে হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে তারা আত্মগোপনে চলে যান । আখি পরবর্তিতে পল্লব নামের এক যুবককে বিয়ে করে তিনসন্তানকে নিয়ে পল্লবের সাথে বসবাস করতে থাকেন। যা জানতে পেরে গোবিন্দ গং পল্লবের পেছনে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেয়। এসব বিষয়ে আখি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে টিএসআই রফিকের প্রভাব খাটিয়ে উল্টো হয়রানী করে গোবিন্দরা। পরে এ ঘটনায় উপরে উল্লেখিত স্বজনদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এরপর তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর সন্ধা ছয়টায় বিরামপুর পশ্চিম পাড়ার ভাড়া বাড়িতে হামলা চালায় গোবিন্দ ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। মামলা প্রত্যাহার না করলে খুন করে লাশ গুম করে দেয়ার হুমকি দেয় চলে যান। এ ঘটনায় তিনি ওইদিনই কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু আজও অব্দি কোনো সমাধান পাননি তিনি। সাবেক টিএসআই রফিকের সহযোগি হওয়ায় গোবিন্দর বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন আখি রানী বিশ্বাস। গোবিন্দ বিশ্বাসের অত্যাচারে তিনসন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, যশোরে এস এম মোস্তফা কামাল শিপা নামে একজন ঠিকাদারকে অপহরণ এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১২ লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠে সদর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন টিএসআই রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আদালত মামলাটি এজাহারের নির্দেশ দেন। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হলেন এই গোবিন্দ বিশ্বাস। অভিযোগ রয়েছে টিএসআই রফিকের ঘনিষ্ট সহযোগি হচ্ছেন এই গোবিন্দ। টিএসআই রফিকের যশোরের সম্পদসহ নানা কিছু যারা দেখা শোনা করেন তাদের মধ্যে অন্যতম ওই বিরামপুরের গোবিন্দ বিশ্বাস।
বিশেষ প্রতিনিধি