Wednesday, September 18, 2024

করোনায় ব্যাপক লোকসানের মুখে যশোরের পুস্তক ব্যবসায়ীরা

- Advertisement -

করোনায় ব্যাপক লোকসানের মুখে যশোরের পুস্তক ব্যবসা। টানা চারমাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ ব্যবসা একেবারেই নেই বললে চলে। করোনার ভয়াল থাবায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন পুস্তক বিক্রেতা ও কর্মচারীরা।  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যশোর জেলায় সর্বমোট ২৬০টি বইয়ের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে শহরে রয়েছে ৪৫টি। ছোট দোকানগুলো বাদে অন্য দোকানগুলিতে এক থেকে পাঁচজন কর্মচারী রয়েছে। প্রতিটি দোকানের ভাড়া দু’ থেকে পাঁচ হাজার। ব্যবসা না চললেও কর্মচারীদের আংশিক বেতন ও ভাড়া গুণতে গুণতে ঋণের বোঝা ভারী করে ফেলেছেন মালিকরা। আর কর্মচারীরা অর্ধেক বা আংশিক বেতন নিয়ে কোনো রকম খেয়েপড়ে বেঁচে আছেন। আবার যারা চাকরি হারিয়েছেন তারা অসহায় জীবনযাপন করেছেন।  গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরই মূলত বই ব্যবসায় ভাটা পড়ে। এরপর এপ্রিলের শেষে লকডাউনের মুখে পড়ায় বন্ধ করে দিতে হয় দোকানগুলো। টানা দেড় মাস দোকানগুলো বন্ধ থাকায় অনেক কর্মচারীই বেতন পাননি। মে মাসের শেষে দোকানগুলো খুললেও কোনো ক্রেতা না থাকায় বেচাকেনা স্থবির হয়ে পড়েছে। শ্রীঘ্রই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে প্রতি ব্যবসায়ীর পাঁচ থেকে ৫০ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হবে বলে ধারণা করছেন প্রকাশক ও প্রস্তক বিক্রেতা সমিতি। এ মুহূর্তে ভয়ঙ্কর দুঃসময়ের মুখোমুখি দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য খরচাদি মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে মালিকদের জন্যে। ছোট ছোট বই বিক্রেতারা একবারে পথে বসে যাওয়ার অবস্থায় আছেন। আর কর্মচারীরা অর্ধেক বা আংশিক বেতন নিয়ে কোনো রকম খেয়েপড়ে বেঁচে আছেন। অধিকাংশই কর্মচারীই চার থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন পান। এ টাকায় কোনো রকম সংসার চলে তাদের। কিন্তু এ স্বল্প বেতন যদি বন্ধ বা অর্ধেকে নেমে আসে তখন টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে পড়ে বলে জানান কিছু কর্মচারী। এ অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবতের জীবযাপন করছেন তারা। হাসান বুক ডিপো ও জনতা লাইব্রেরির কর্মচারীরা বলেন, করোনার আগে যেখানে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হতো সেখানে বর্তমানে দেড় থেকে দু’লাখ টাকার বই বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি যশোর শাখার কোষ্যধক্ষ জসীম উদ্দীন বলেন, সঞ্চিত অর্থ বা ঋণ নিয়ে কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছেন মালিকরা। করোনার সময়ে বই বিক্রি ১০ গুণ কমে এসেছে। আবার অনেকের বেচাকেনা নেই। কোনো সহযোগিতা না পেলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়বে এ সেক্টর বলে জানান তিনি।
এদিকে সাধারণ মানুষ আর্থিক সংকটে পড়ায় করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও বিক্রি হবে না সৃজনশীল বই। স্বভাবতই এ সেক্টর হুমকির মুখে পড়বে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। অন্যান্য সেক্টরের মতো স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার জন্যে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন যশোরের পুস্তক ব্যবসায়ীরা।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত