যশোরের হামিদপুর পশ্চিমপাড়ায় বিরোধীয় সম্পত্তি ও বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় নুরুল ইসলাম গংয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আসাদুজ্জামান পক্ষ ২৮ জুন দুপুরে এ অভিযোগ করেছেন। একইসাথে ভাংচুর ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে, নুরুল ইসলাম শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে আসাদুজ্জামান পক্ষকে জবরদখলকারী হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন। ব্যাংকে দ্বায়বদ্ধ সম্পত্তি আদালতের রায়ে ফিরে পেয়েছেন দাবি করে অবৈধ দখলদার মুক্ত করতে সকলের সহায়তা কামনা করেছেন তিনি। এসময় তার আত্মীয় যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলনসহ তার নিকটজনরা উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম জানান, ৮৬ নং হামিদপুর মৌজায় ২৪৫ এর ১৬১৯ এবং ১৬২০ দাগের ২ একর ৯৭ শতক জমি বন্ধকী রেখে বিডিবিএল থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। বন্ধকী ২ একর ৯৭ শতক জমি ছাড়াও হামিদপুর মৌজায় তার ও তার নিকটজন নুর মোহাম্মদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে। ব্যাংকে বন্ধকী রাখা ওই ২ একর ৯৭ শতক জমি নিলামে কেনেন ওই এলাকার আসাদুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু তিনি কেনা জমি ছাড়াও তার ও নুর মোহাম্মদের জায়গা জবরদখল করে রেখেছেন। উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের সকল পর্যায়ে রায় তার পক্ষে থাকা সত্বেও আসাদুজ্জামান ওই জায়গা জোর করে অবৈধ দখলে রেখেছেন। তার জায়গায় নির্মিত বাড়িটি আইন বহির্ভুতভাবে অবৈধ ভোগ দখল করে রেখেছেন।
নুরুল ইসলাম সাংবাদিক সম্মেলনে বৃহস্পতিবারের ঘটনার ব্যাপারেও অবহিত করেন। ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার বাড়ি ও জায়গাটি উদ্ধার করতে সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
এদিকে, ৩ একরের বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে গত পরশুর অনাকাঙ্খিত ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় এখন ওই এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিও চলছে। আদালতের রায় পেয়েছেন দাবি করে নুরুল ইসলাম পক্ষ ভোগ দখলীয় পক্ষ আসাদুজ্জামান গংকে উচ্ছেদের নামে বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। উচ্ছেদের নামে ভাংচুর লুটপাটের নেপথ্যে ইন্ধন দিয়েছেন বলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী আসাদুজ্জমান ও তার লোকজন। তারা জানান, বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাংচুর করা হচ্চে এমন স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্র মূহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে পড়ে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে ২৮ জুন এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত আসাদুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা এবং ওই বাড়িতে বসবাসকারীরা দাবি করেছেন তাদের উপর জুলুম ও নির্যাতন করা হচ্ছে। ২৭ জুন বৃহস্পতিবার আকস্মিকভাবে শতাধিক যুবক বুলডোজার নিয়ে ওই বাড়িতে হানা দিয়ে লুটপাটসহ বাড়ির আটটি ঘর ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তাদের বাড়ির ছাগল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভাংচুরে বিশাল অংকের ক্ষতি হয়েছে। ঘটনায় ২৮ জুন তারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তারা। একইসাথে ক্ষতিপূরণও চেয়েছেন।
এদিকে, শুক্রবার নুরুল ইসলামের সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন জানিয়েছেন, আদালতের রায়েই জমি ফিরে পেয়েছেন নুরুল ইসলাম। ২৭ জুন নুরুল ইসলামের লোকজন হামিদপুরে গিয়ে তার জায়গা থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলে আসেন। ভাংচুর ও লুটপাট তারা কেউই করেননি। তবে কে বা কারা হামলা বা ভাংচুর বা লুটপাট করেছে সে ব্যাপারে তিনি কিছ্ ুজানেন না বা নুরুল ইসলামও অবগত নন। তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অকারণে তাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।
ঘটনার ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, ওই দিনের ঘটনার সংবাদ পেয়ে ওখানে কয়েকটি টিম পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভাংচুরে জড়িতরা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এছাড়া, আসাদুজ্জমান পক্ষ নুরুল ইসলাম গংয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাতদিন সংবাদ