‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’ লোকসংগীত কিংবা পঙক্তিটি শোনেননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, কালজয়ী এই লোকগীতির স্রষ্টা এখন না ফেরার দেশে। শুক্রবার মধ্যরাতে চুঁচুড়ার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুকালে কবির বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করেছিলেন অরুণ। চাকরি করতেন হিন্দুস্তান মোটরে। সঙ্গে লেখালিখিও করতেন। তাকে পরিচিতি এবং খ্যাতি এনে দিয়েছিল ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’। ওই কবিতা পরে গান হয়ে লোকের মুখে মুখে ফিরেছে। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও অরুণের পরিচিতি তৈরি করে দেয় এই গান। বাংলার লোকসংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতেন অরুণ। ঘুরতেন পাহাড়, জঙ্গল এবং আদিবাসী এলাকায়। ‘লাল পাহাড়ের’ সুরেই অমর হয়ে থাকবেন কবি।
চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে অরুণের বাড়ির নাম ‘সোনাঝুরি’। বাড়িতে তার স্ত্রী, দুই পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতিরা রয়েছেন। পরিবার সূত্রে খবর, শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন অরুণ। শুক্রবার কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গলমহল অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখান থেকেই কিছুটা ঠান্ডা লেগেছিল, জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কবির পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই তার ফুসফুসে সমস্যা ছিল।
স্যান্টাক্লজের মতো লাল পোশাক পরে কাঁধে ঝোলা নিয়ে ঘুরতেন অরুণ। মাথায় বাঁধতেন রঙিন রুমাল। ঝোলায় চকোলেট রাখতেন। ছোটোদের দেখলে চকোলেট দিতেন। তার প্রয়াণে হুগলির কবি-সাহিত্যিক মহলে শোকের ছায়া নেমেছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অরুণের দেহ বাড়ি থেকে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে মুক্তমঞ্চে শায়িত থাকবে দেহ। কবির গুণগ্রাহীরা সেখানে যেয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। পরে শ্যামবাবুর ঘাটে কবির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
অনলাইন ডেস্ক