Thursday, October 3, 2024

যশোরে চাঁদা দাবিতে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

- Advertisement -

যশোর প্রতিনিধিঃ যশোর সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরের দিন এই হামলার ঘটনা ঘটে।

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও চাঁদার দাবিতে জমি দখল, গাছ কর্তন, ভাচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।

মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লা বলেন, যশোর সদর উপজেলার খাজুরা মৌজার ২৮ নম্বর আরএস খতিয়ানের  ৫৫, ৩০ ও ৫৩ দাগের জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছি। খাজুরা গ্রামের আবুল কাশেম, কামাল হোসেন, সাইদুল, বাচ্চু, টনি, পলাশ,  সাবদুল্লাহ গং দীর্ঘদিন যাবৎ আমার জমি দখল করার চেষ্টা করে আসছে। আমাকে নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করেছি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হন।

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর কাশেম, কামাল গং ওইদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে ১০ থেকে ১৫ জন লোক নিয়ে আমার বাড়ি আসে ও আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করি। পরদিন ৬ আগস্ট সকালে আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে কামাল, কাশেমসহ অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন লোক আমার বাড়িতে এসে চাঁদার টাকা দিতে বলে। অধিকাংশ লোকের হতে গাছি দা, লোহার রড, চাপাতি, ছোরা ছিল। আমার কাছে কোনো টাকা না থাকায় আমি চাঁদা দিতে পারিনি। তখন তারা স্থানীয়দের নির্দেশের কথা জানিয়ে সবাইকে লুটপাট ভাংচুর শুরু করতে বলে। তখন আসামিরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আমার বাড়িতে লুটপাট শুরু করে ও লুটপাট সন্ধ্যা ৬ টার পর পর্যন্ত চলে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে চাপাতি দিয়ে কোপাতে আসলে আমি ও আমার পরিবারের সবাই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। তখন তারা আমার ২টি পাকা বাথরুম, একটি পাকা রান্নাঘর ভাংচুর করে ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। একটি কাঠের ঢালা ভাংচুর করে প্রায় ৪০ মনের বেশি শুকনা কাঠ লুটপাট করে নিয়ে যায়। বাথরুম ভাঙার পর একটি গ্রুপ এটাচ বাথরুম ওয়ালা ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর করে ও ড্রেসিং টেশিশের ড্রয়ার থেকে নগদ পচাত্তর হাজার টাকা, একটি গলার চেইন ও এক জোড়া কানের দুল নিয়ে যায়। অন্য গ্রুপগুলো করাত দিয়ে আমার বাড়ির বড় বড় গাছ কেটে ভ্যানে করে নিয়ে চলে যায়। আমার প্রায় ২৫টি মেহেগনী গাছ কেটে নিয়ে যায় যার এক একটি গাছের মূল্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লা আরও বলেন, ৬ আগস্ট লুটপাট চলাকালীন আমি লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম হ্যাপির সাথে ফোনে যোগাযোগ করি। হামলা বন্ধের জন্য বাড়িতে লোক পাঠায়। তখন তিনি বলেন “আমি তাদের হামলা বন্ধের জন্য বলতে পারবো না। জায়গা তো সরকারি। তারা ভাঙছে ভাঙ্গুক।” পরবর্তীতে আমার জমির কাগজপত্র হ্যাপিকে দেখালে  বলে আমি না জেনেই কাশেমদের বলে ফেলেছিলাম। এখন আর আপনার কোনো ক্ষতি করবো না।’ ঘটনার কয়েকদিন পর আমি লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দেলুর কাছে গেলে বলে “আমি জানতাম আপনার জমি সরকারি। এজন্য ওরা আমার কাছে আসলে আমি তাদের বলেছি সরকারি জমি যখন, তখন তোমরা জমি দখল কর।’ আমি জমির কাগজপত্র দেলুকে দেখালে সে বলে এটা মালিকানা সম্পত্তি সেটা আমি আনতাম না। ঘটনার পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। অভিযুক্তরা আগে  লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আলিমুজ্জামান মিলনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মদদে তারা আমার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। আমি দোষীদের শাস্তি ও ন্যায় বিচার চাই। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাতদিন সংবাদ/আর কে-০৬

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত