উপজেলার নিম্ন অঞ্চলসহ রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে গ্রাম্য হাট বাজারসহ ১’হাজার ৬৯২ হেক্টর জমির আমন ধান।
উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, দেশে নিম্নচাপের প্রভাবে অতিবর্ষনের কারণে কেশবপুর উপজেলায় গত ৭২ ঘন্টায় ২৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতিবর্ষনে ১ হাজার ৬৯২ হেক্টর জমির আমন ধান প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া তলিয়ে গেছে ১২০ হেক্টর জমির সবজি, ১০ হেক্টর জমির মরিচ, ১০ হেক্টর জমির হলুদ, ৪ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন তরমুজের ক্ষেত।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর নাব্যতা না থাকায় গত তিনদিনের অতিবর্ষনের ফলে কেশবপুর পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, পাঁজিয়া, ত্রিমোহিনী, সাগরদাঁড়ি, মজিতপুর ও সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ছোট বড় সড়কসহ আবাদকৃত আমন ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে কেশবপুর পৌর এলাকায় গিয়ে জানা যায়, পৌর এলাকার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলসহ মধ্যকুল, আলতাপোল, সরফাবাদ, ভবানীপুর, বাজিতপুর, বায়সা ও সাবদিয়া গ্রাম, শহরের হাবিবগঞ্জ বাজার, চারআনি বাজার, কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, পুরাতন মুরগী হাট, থানা চত্বর পানিতে তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, কেশবপুর-কাটাখালি সড়ক, কেশবপুর -গৌরিঘোনা সড়ক, কেশবপুর-পাঁজিয়া সড়ক, কেশবপুর -ফতেহপুর সড়কহ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক কম বেশি পানিতে তলিয়ে গেছে।
কেশবপুর উপজেলার মৎস্য অফিসার সজিব সাহা সাংবাদিকদের বলেন, গত তিনদিনের টানা বর্ষণে উপজেলার শতশত মাছের ঘের তলিয়ে গেছে এবং হাজার হাজার মাছের ঘের হুমকির মুখে। বৃষ্টিপাত বন্ধ নাহলে উপজেলার হাজার হাজার মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে অবকাঠামোসহ শত কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হবে। কেশবপুর উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তার অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে উজানের পানির চাপে ও অতিবৃষ্টির কারণে শত-শত কাঁচা-পাকা বাড়িঘর ধ্বসে পড়ছে। প্লাবিত হয়ে গেছে অসংখ্য গ্রম্যহাট বাজার ও রাস্তাঘাট। পাঁজিয়া-ডোঙ্গাঘাটা সড়ক, পাঁজিয়া-হদ-মাগুরখালি সড়ক প্লাবিত হয়ে গেছে। এছাড়াও হাসানপুর ইউনিয়নের বগা,মহাদেবপু, রেজাকাটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের পরচাক্রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাউশলা দাখিল মাদ্রাসা এবং সুফলাকাটী ইউনিয়নের কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি সম্পুর্ন বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক প্রভাষক আলাউদ্দিন আলা বলেছেন তাঁর ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ইউনিয়নের ৯ টি ওয়াডের মধ্যে আলতাপোল ৫ নং ওয়ার্ড বাদে সবকয়টি ওয়াড তলিয়ে গেছে। গ্রামের মানুষ বাড়ি ঘর ছাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রায় নিয়েছে ২০টি পরিবার। তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের ঘরের ভেতরে পানি, রান্না করে খেতেও পারছে না, কেন ফোন করতে পারছ না, এর জন্য তারা আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছেন। তারা আরো বলেন আমাদের প্রাণের প্রয়োজন নাই। প্রশাসন নিকট আবেদন দ্রুত পানি সরানোর ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করে।
আর কে-০৪
- Advertisement -